খিলক্ষেতে সন্ত্রাসী খাইরুল দেওয়ানের শ্যালক সৈকতের অস্ত্রের ঝনঝনানি
নেপথ্যে মোবারক দেওয়ান

খিলক্ষেত বরুয়া এলাকার ত্রাস মোবারক দেওয়ান। তার অন্যতম সহযোগী খাইরুল দেওয়ান ও তার শ্যালক সৈকত (ওরফে পিস্তল সৈকত)। সন্ত্রাসী মোবারক দেওয়ান এবং খাইরুল দেওয়ান সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পাঁচ আগস্ট বিভিন্ন থানা থেকে লুটকৃত অস্ত্র দিয়ে চাচা-ভাতিজা বাহিনী চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত খিলক্ষেত এলাকার সাধারণ মানুষ। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভূমি দখল, অপহরণ, নারী নির্যাতনসহ বহু অভিযোগ রয়েছে খাইরুল দেওয়ানের বিরুদ্ধে। গত ১৬ বছর হাসিনার শাসনামলে আওয়ামী ছত্রছায়ায় চালিয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। হাসিনা সরকারের পতনের পর যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে খাইরুল দেওয়ান। টেম্পো স্ট্যান্ড, মাছের ঘের দখলের টাকা দিয়ে গত দুই মাসে কিনেছে অর্ধকোটি টাকা দামের বিলাসবহুল গাড়ি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, খাইরুল দেওয়ানের নেতৃত্বে খিলক্ষেত বরুয়া এলাকায় ডাকাতি চলে। ২২ মার্চ শনিবার মাগরিবের কিছুক্ষণ আগ মুহূর্তে আনোয়ার ও দেলোয়ার দুই ভাই পরিচালিত ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে খাইরুল দেওয়ান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। আনোয়ার-দেলোয়ার চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের উপর অকথ্য নির্যাতন ও অফিস ভাঙচুর করে খাইরুল দেওয়ান ও সৈকত গং। খিলক্ষেত বড়ুয়া অঞ্চলের সকল ইন্টারনেটের লাইন কেটে দেয় তারা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের চেষ্টায় সন্ত্রাসী মোবারকের ভাতিজা কথিত যুবদল নেতা খিলক্ষেত থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি খাইরুল দেওয়ান ও তার শ্যালক সৈকত আগ্নেয়াস্ত্রসহ ব্যবসায়ী দুই ভাইকে তাদের অফিসে ঢুকে হত্যাচেষ্টা চালায় ও লাখ টাকা লুট করে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে আনোয়ার ও দেলোয়ার। মোবারক বাহিনীর কথিত যুবদল নেতা চাঁদাবাজ খাইরুল দেওয়ানের অপকর্ম যেন থামছেই না। যেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় চাঁদাবাদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পোষণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তথ্য ও অভিযোগ পেলেই করা হচ্ছে বহিষ্কার, সেখানে অভিযুক্তরা বুক চিতিয়ে অপকর্ম করে যাচ্ছে। তবে কথিত যুবনেতা খাইরুল দেওয়ানের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের নেতৃবৃন্দ।
মোবারকের বিরুদ্ধে যত মামলা: রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মোবারকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার খোঁজ পাওয়া গেছে। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- গত বছরের ৭ নভেম্বর বাড্ডা থানায় দায়েরকৃত মামলা নং-১৩, উত্তরা থানায় মামলা নং-২৪ (১১-০২-২০০২), বাড্ডা থানায় মামলা নং-১৭ (১৬-০৬-২০০০), বাড্ডা থানায় মামলা নং-১ (০২-০৫-২০০১), গুলশান থানায় মামলা নং-৪৫ (১৩-০২-১৯৯৭), গুলশান থানায় মামলা নং-৪৮ (২৩-০৩-১৯৯৭), বাড্ডা থানায় মামলা নং-২৪ (১৯-০৮-২০০০), কোতোয়ালি থানায় মামলা নং এফআইআর নং ২৪৩/২০২, (১৬-০৭-২০০২), বাড্ডা থানায় মামলা নং ৭৪/৩ নন এফআইআর, বাড্ডা থানার মামলা নং ১২ (৮/১০/০৩)। এছাড়াও মোবারকের নামে বিভিন্ন থানায় ২০-২৫টি সাধারণ ডায়েরি রয়েছে বলে জানা যায়। ২০০৩ সালে বাগানবাড়িতে মোর্শেদ হাদির বাবা ফজলুল হক হাদির বাড়িতে চাঁদার দাবিতে খাইরুল ও তার দলবলের গুলির ঘটনায় জিডি করা হয়। সন্ত্রাসী পরিবারটির অন্যতম মোবারক দেওয়ান, তার ভাই শাহাবুদ্দিন দেওয়ান ও মোজাম্মেল দেওয়ান, ভাতিজা খাইরুল দেওয়ান গত ৩-৪ যুগ ধরে খিলক্ষেতবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্ধশত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলা মাথায় নিয়েও মোবারক ও তার বাহিনী যেন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
Comments