Image description

ভারত ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে ৬৪ জেলায় সম্প্রীতি সমাবেশের প্রস্তাব এসেছে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারত ইস্যুতে হঠকারিতা না করারও প্রস্তাব দিয়েছেন সিনিয়র রাজনীতিকরা। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংলাপ শেষে বিভিন্ন দলের নেতারা বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানান।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের প্রতি বিদেশি দূতাবাসগুলোকে সক্রিয় করার পরামর্শ দেন। অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দূতাবাসগুলোকে সক্রিয় করতে হবে।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন,  আমি আমার বক্তব্যে সারাদেশের ৬৪ জেলায় শান্তি সমাবেশ করার প্রস্তাব করেছি। সব ধর্মের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সম্প্রীতি সমাবেশ করার আহ্বান জানিয়েছি।

বৈঠকসূত্র জানায়, বক্তব্য দিতে এসে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জাতীয় সংকট মোকাবিলায় জাতীয় সরকারের প্রস্তাব করেন। তিনি সব দলের অংশগ্রহণে এই সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। নূরের ভাষ্য, চলমান সংকট রাজনৈতিক, তাই সব দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে সমাধান করা উচিত।

নুরের বক্তব্যের পর বক্তব্য রাখেন শাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি জাতীয় সরকারের বিরোধিতা করেন। বৈঠকে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান।

সভায় এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ১ দিন জাতীয় ঐক্যের প্রতীকী সংহতি হিসেবে সর্বস্তরের নাগরিকদের সারাদেশে একযোগে একই সময়ে যার যার অবস্থানে জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচির প্রস্তাব দেন। তার এই প্রস্তাবকে বেশিরভাগ দলের নেতারা সমর্থন করেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে ডাকা যৌথ সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন দলটির সম্পাদক  ফয়জুল হাকিম ও দলের জাতীয় পরিষদ সদস্য মুঈনুদ্দীন আহমেদ।

যৌথ সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, ভারত সরকারকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। এখনও পর্যন্ত ভারত সরকার মুখে এক কথা বলছে, বাস্তবে অন্য কাজ করছে।

বৈঠকে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান,  গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, জামায়াতের সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আকতার হোসেন প্রমুখ অংশ গ্রহণ করেন।

এছাড়া বৈঠকে যোগ দেন মোশরেফা মিশু, রাশেদ খান, মহিউদ্দিন ইকরামসহ অন্তত শতাধিক রাজনীতিক। 

সংলাপে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, তরিকত ফেডারেশনসহ ১৪ দলীয় জোটের শরিকদলগুলোকে দেখা যায়নি। অনিবন্ধিত দলের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বৈঠকে ডাক পেয়েছেন।