ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে ‘গণভোট’ অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরিচালক (জনসংযোগ) মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট একই দিনে সম্পন্ন হবে।
ইসি জানিয়েছে, গণভোটে ভোটারদের কাছে একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের মাধ্যমে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ সূচক মতামত চাওয়া হবে। প্রশ্নটি হলো—
‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন? (হ্যাঁ/না)।’
জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে চারটি প্রধান সাংবিধানিক সংস্কার প্রস্তাবের ওপর এই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে:
১. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান: নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
২. দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ: আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি ‘উচ্চকক্ষ’ গঠিত হবে।
সংবিধান সংশোধন করতে হলে এই উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের অনুমোদন আবশ্যক হবে।
৩. ৩০ দফার আবশ্যিক বাস্তবায়ন: জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্যে পৌঁছানো ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে—
সংসদে নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি।
বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন।
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ।
মৌলিক অধিকার সুরক্ষা।
আগামী নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলো এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে।
৪. অন্যান্য সংস্কার: জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
ইসি জানায়, এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একই দিনে সাধারণ নির্বাচনের পাশাপাশি দেশের ভবিষ্যৎ সাংবিধানিক কাঠামোর বিষয়ে সরাসরি জনগণের রায় নেওয়া হবে।




Comments