মাধবপুরে সরিষা ফুলে প্রকৃতির নতুন সাজ; ভালো ফলনের আশায় কৃষক
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় শীতের আগমনে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে সরিষা ফুলের সোনালি কারুকার্য। দিগন্তজুড়ে বিস্তৃত হলুদ ফুলের সমারোহ দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে। শীতের মৃদু রোদে ঝলমল করা সরিষা ফুল আর সবুজ পাতার দোলায় সৃষ্টি হয়েছে এক অপূর্ব পরিবেশ। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন বিভিন্ন এলাকার দর্শনার্থীরা।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়—যেদিকে চোখ যায় কেবলই হলুদ সরিষার গালিচা। মৌমাছির গুনগুন শব্দ আর প্রজাপতির উড়াউড়িতে চারদিক সরব। প্রকৃতির এই রূপ শুধু সৌন্দর্যপ্রেমীদেরই নয়, কৃষকদের মনেও জাগিয়ে তুলেছে আশার আলোকছটা।
স্বল্প ব্যয়ে বেশি লাভ, সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক :
কৃষকরা জানান, সরিষা চাষে খরচ কম, পরিশ্রমও তুলনামূলক কম লাগে। তাই স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভের আশায় বছর বছর বাড়ছে সরিষা আবাদ। এবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠে রোপণ করা হয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাত—উপশি, টরি-৭, রাই-৫, কল্যানিয়া, সোনালি সম্পদ ও বারি-৮। তেলের মান ভালো হওয়ায় এসব জাতের চাহিদাও বাজারে বেশি।
এ মৌসুমে চাষ হয়েছে ১১০৫ হেক্টর জমিতে :
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি রবি মৌসুমে মাধবপুরে ১১০৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১৫ হেক্টর বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজিব সরকার বলেন, “মাধবপুরের ভাটি এলাকার মাটি সরিষা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর সরিষার ফলন ভালো হবে বলে আমরা আশা করছি।”
কৃষকের মুখে স্বপ্নের হাসি :
শিমূলঘর গ্রামের কৃষক হারুর অর রশিদ (কাজল লস্কর) বলেন, “সরিষা চাষে ঝামেলা কম, খরচও কম। এবার ফুল দেখে মনে হচ্ছে ফলন ভালো হবে। দামটা হাতে পেলে আমাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।”
শ্রীকান্ত দেব নাথ বলেন, “সরিষা এখন এলাকার অন্যতম লাভজনক রবি ফসল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। তেলের মান ভালো হওয়ায় বাজারেও ভালো দাম পাওয়া যায়।”
হলুদ সরিষা ফুলে সাজানো মাধবপুরের মাঠ শুধু শীতের সৌন্দর্যই নয়—এই রূপের মধ্যেই লুকিয়ে আছে কৃষকের বছরের স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর নতুন সম্ভাবনার দীপ্তি।




Comments