Image description

দিন-রাত্রির সহজ সমীকরণে বিকালের আলো বলে দেয়- জীবনের নামতা। খুব সহজ নয়, প্রতিটি মানুষে জীবনের গল্প হয় ভিন্ন, নতুন ভাবনার আয়না। জীবন যখন বিচ্ছিন্ন চিত্রে না থেকে, দূরের সব নিকটে এনে আলোর মিছিলে পরিণত হয়, ঠিক তখনই জীবনের মানে বোঝা যায়- বোঝা যায় একটি গল্পের আবেদন। এ আবেদন আরো মহান করে তোলে শিল্পীর অভিনয়। সিনেমা, নাটক বা ওয়েব সিরিজ বা ওয়েব ফিল্ম যেটাই বলেন না কেন গল্প এবং অভিনয় দর্শকের দূরত্ব কমিয়ে নিকটে আনে। এমন প্রমাণ রেখেছেন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি। তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরুর সময় থেকে এখন পর্যন্ত নিজেকে রেখেছেন আলোচনার শীর্ষে। তার অভিনীত বেশ কয়েকটি সিনেমা এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে। দর্শকের ভালোবাসায় মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোতে পরীমণি হয়েছেন সিক্ত। একেকটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর পরীমণি নিজেকে অভিনয়ে আরো পরিপূর্ণ করে তোলার চেষ্টায় মেতে ওঠেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার পরীমণি'কে সারা বাংলার দর্শক সুপ্তি'রূপে দেখার অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে, দর্শকের মনে উড়ছে পরী।

কিঙ্কর আহসানের উপন্যাস অবলম্বনে 'রঙিলা কিতাব' সাত পর্বের এ ওয়েব সিরিজটির প্রধান চরিত্র সুপ্তি। তার এ মহান গল্প আরো মহান করে তুলেছে পরীমণি'র অভিনয়। তিনি অতীতের সব অর্জন ছাড়িয়ে যাবেন। রঙিলা কিতাবের ট্রেলারে সেই প্রমাণও মিলেছে। অবশ্যই দর্শক 'রঙিলা কিতাব' দেখার পরে এ মন্তব্য মিলিয়ে নেবেন। এ বিষয়ে পরীর বক্তব্য ভিন্ন।

হাসতে হাসতে পরী বলেছেন- 'আমার প্রিয়জনেরা আমাকে ভালো মায়ের তকমা দিয়ে অনেকটা ক্ষতি করেছেন। সবাই মা চরিত্রের জন্যই আমাকে ডাকছেন।' এটি তার অভিযোগ নয়, আনন্দের। কথাটি তিনি রাগে বা অভিমানে বলেননি- আনন্দে বলেছেন। তিন ভালোর সমন্বয়ে পরীমণি হয়েছেন পরিপূর্ণ- ভালো মানুষ, ভালো মা এবং ভালো একজন অভিনেত্রী। তবে বর্তমানে তার সম্পর্কে জোরালো যে মন্তব্য তিনি একজন ভালো মা। সেই কারণেই মায়ের চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করছেন।

এ সিরিজে পরীমণিকে সন্তান-সম্ভবা মায়ের চরিত্রে দেখা যাবে। পরীর চরিত্র মানে বাস্তবতার চিত্র। গল্পটিও জীবনবোধের, একজন সম্ভবা মায়ের- বরিশালের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রদীপ ও সুপ্তির সুখের সংসার। তবে এই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয় না। প্রদীপের অতীত তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় তাদের। একদিকে পুলিশ, অন্যদিকে গ্যাংয়ের লোকজন খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রদীপকে। গর্ভবতী সুপ্তিও ছুটতে থাকে স্বামীর সঙ্গে। 'রঙিলা কিতাব' ওয়েব সিরিজের ট্রেলারে দেখা গেল এমন গল্প। এতে সুপ্তি চরিত্রে আছেন পরীমণি আর প্রদীপের ভূমিকায় মোস্তাফিজ নুর ইমরান।

সিনেমা নির্মাণ গয় গল্পে, শুধু সিনেমার গল্প নয়- প্রতিটি গল্পই জীবনের, সংসার সমাজের, দেশের। বাস্তবতার নিরিখেই গল্প নির্মাণ হয়। তবে এই গল্প ফুটে তোলার জন্য দরকার ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী। গল্পকার ও নির্মাতার চেষ্টা থাকলেও অভিনয় শিল্পী না চাইলে ভালো কিছু নির্মাণ হয় না। এমন একজন অভিনয় শিল্পী পরীমণি। তার অভিনয়কে অভিনয় বলা যায় না, বাস্তব চরিত্রই ফুটে তোলার চেষ্টা করেন।

'রঙিলা কিতাব' ওয়েব সিরিজে এবার পরীকে নতুনরূপে দেখতে পাবেন দর্শক। তারপরও পরীমণি কিছুটা ভয়ে আছেন। দর্শকের উৎসাহ দেখে- আজ সেই ভয়টা কাটতে শুরু করেছে। মোটকথা সারা বাংলাদেশের বিশেষত পরীমণি ভক্তরা 'রঙিলা কিতাব' দেখার ভীষণ অপেক্ষায় ছিলেন। সেই অপেক্ষা আজ শেষ হলো। পরী উড়ছেন দর্শকের মনে।

মা হওয়ার পর এটাই ছিল পরীমণির প্রথম কাজ। 'রঙিলা কিতাব'-এ কাজ করা প্রসঙ্গে পরীমণি বলেন- 'আমি আমার দিক থেকে সবাই অনেক বেশি পছন্দ করবেন রঙিলা কিতাব। রঙিলা কিতাবের সুপ্তি'কে অনুভব করতে হলে হৃদয় দিয়ে রঙিলা কিতাব সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। তাই সবাইকে আমি অনুরোধ করবো সুপ্তি চরিত্রকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করে ওয়েব সিরিজটি উপভোগ করার জন্য। এটা সত্যি এই ওয়েব সিরিজ নিয়ে যখন আমার সঙ্গে কথা হয় তখন আসলে কোনো কাজ নিয়ে ভাবনার জায়গাতে ছিলাম না আমি। কারণ আমার বাচ্চার বয়স তখন দেড় দুই মাস। এ সময় বাবুকে রেখে শুটিং-এ যাব, এটা ভাবতেই পারিনি। কিন্তু সেসময় থেকে এক বছর পরেও যে এই সুপ্তি চরিত্রটি আমার জন্য বরাদ্দ ছিল, এটা সত্যিই পরম সৌভাগ্য। আমার মনে হয় সুপ্তি চরিত্রটি আমি ঠিকঠাকমতো করতে পেরেছি, বাকিটা আসলে দর্শকই ভালো বলতে পারবেন।'

সরিজের পোস্টারেও দেখা মিলেছে দুজনের। এক হাতে পিস্তল, আরেক হাতে পরীকে জড়িয়ে ধরে আছেন নুর। পরীর চোখে-মুখে ভয়, গুটিসুটি হয়ে নায়কের বুকে খুঁজছেন আশ্রয়। মানুষের অট্টালিকা থাকলেও আশ্রয় খোঁজে প্রিয় মানুষের বুকে। হৃদয় মানুষের প্রশান্তির আশ্রয়। এমন গল্প নিয়েই 'রঙিলা কিতাব'। আর এ গল্পের চরিত্র দর্শকের জন্য পর্দায় তুলে ধরবেন পরীমণি। এই প্রথম কোনো ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন পরীমণি। স্ক্রিপ্ট পড়ার পর থেকেই কাজটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি। পরীমণি এমন একজন অভিনেত্রী যার অভিনয় দর্শক মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন। অতীতের কাজ তার বড় প্রমাণ। তিনি নিজের মেধার সবটুকু দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। পরীর সঙ্গে অভিনয় করেছেন মোস্তাফিজ নুর ইমরান। তিনি কাজটি করে বেশ আনন্দিত। তার প্রত্যাশাও কম নয়। ইমরান তার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেন- 'এটা দারুণ প্রেমের গল্প। ভালোবাসা, রহস্য ও উত্তেজনায় ভরপুর। পাশাপাশি পলিটিক্যাল অ্যাটমোসফিয়ার আছে। কেন এই গল্পকে রক্তাক্ত প্রেমের গল্প বলা হচ্ছে, সিরিজটি দেখলেই দর্শক তা বুঝতে পারবেন। পোস্টার রিলিজের পর অনেকে প্রশংসা করছেন। ট্রেলার প্রকাশ হওয়ার পরে আরো বেশি প্রশংসা শুনছি। আশা করি দর্শক নিরাশ হবেন না।'

অনম বিশ্বাস একজন মেধাবী পরিচালক। তিনি নির্মাণ করেন মেধার স্বাক্ষর রেখে। তার নির্মাণ অতীতে দর্শকের মন জয় করেছে, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তিনি বলেন- 'মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গল্প 'রঙিলা কিতাব'। গল্পটা এমনভাবে বলার চেষ্টা করেছি, যাতে দর্শক সহজে কানেক্ট করতে পারেন। এই সিরিজ তৈরি করতে গিয়ে আমরা শুধু বিনোদন নয়, বরং একটি বার্তা দিতে চেয়েছি।'

তিনি আরো বলেন- 'টানটান উত্তেজনার মধ্যে দুর্দান্ত এক প্রেমের গল্প বলা হয়েছে রঙিলা কিতাব সিরিজজুড়ে। সিরিজের প্রতিটি পর্ব দর্শককে স্ক্রিনে ধরে রাখার মতো করে নির্মাণ করা হয়েছে। অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে প্রত্যেক কলাকুশলীসহ আমরা পুরো টিম সর্বোচ্চ দিয়ে কাজটা করেছি।'

নির্মাতা কী বার্তা দিতে চেয়েছেন তা দেখতে বা জানতে আর কয়েকটি দিন অপেক্ষা করতে হবে। নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীদের নিকট দর্শক যা প্রত্যাশা করেছেন- তা পূরণ হবে আশা করছি। দিন যায় আশায়, প্রত্যাশায় এবং অপেক্ষায়। একজন শিল্পীর জন্য এসব আরো কঠিন- আনন্দের। দর্শক অপেক্ষা করে শিল্পীর নতুন কাজের জন্য, শিল্পী অপেক্ষা করে দর্শকের প্রতিক্রিয়া শুনতে। রঙিলা কিতাবের গল্প ও অভিনয় দর্শকের পছন্দ হবে বলে আশাবাদী পরী। তার ক্যারিয়ারে এই সিরিজে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা বিশেষ হয়ে থাকবে বলে জানান। তবে পরীমণি ভয়ে আছেন। কারণ তার প্রথম ওয়েব সিরিজ ঘিরে দর্শকের যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, সে প্রত্যাশা তিনি পূরণ করতে পারবেন কি না, সেটা নিয়ে ভয়ে আছেন।

এ অভিনেত্রী জানান- 'মাতৃত্বকালীন বিরতির পর এই সিরিজ দিয়েই কাজে ফিরেছিলাম। আমার সঙ্গে যখন এ কাজটা নিয়ে প্রথম কথা হয়, তখন আমি কোনো কাজ নিয়ে ভাবনার জায়গাতেই ছিলাম না। কারণ আমার বাচ্চা তখন অনেক ছোট। দেড়-দুই মাস বয়স। ওই সময় বাবুকে রেখে কাজে যাব, ভাবতেই পারিনি। তবে তারা আমার জন্য অপেক্ষা করেছেন। সেই সময় থেকে একটা বছর পরে এসেও যে চরিত্রটি আমার জন্য বরাদ্দ ছিল, এটা আমার সৌভাগ্য। আমার মনে হয়, চরিত্রটি ঠিকঠাকমতো করতে পেরেছি।'অপেক্ষায়। একজন শিল্পীর জন্য এসব আরো কঠিন- আনন্দের। দর্শক অপেক্ষা করে শিল্পীর নতুন কাজের জন্য, শিল্পী অপেক্ষা করে দর্শকের প্রতিক্রিয়া শুনতে। রঙিলা কিতাবের গল্প ও অভিনয় দর্শকের পছন্দ হবে বলে আশাবাদী পরী।

তার ক্যারিয়ারে এই সিরিজে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা বিশেষ হয়ে থাকবে বলে জানান। তবে পরীমণি ভয়ে আছেন। কারণ তার প্রথম ওয়েব সিরিজ ঘিরে দর্শকের যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, সে প্রত্যাশা তিনি পূরণ করতে পারবেন কি না, সেটা নিয়ে ভয়ে আছেন। এ অভিনেত্রী জানান- 'মাতৃত্বকালীন বিরতির পর এই সিরিজ দিয়েই কাজে ফিরেছিলাম। আমার সঙ্গে যখন এ কাজটা নিয়ে প্রথম কথা হয়, তখন আমি কোনো কাজ নিয়ে ভাবনার জায়গাতেই ছিলাম না। কারণ আমার বাচ্চা তখন অনেক ছোট। দেড়-দুই মাস বয়স। ওই সময় বাবুকে রেখে কাজে যাব, ভাবতেই পারিনি। তবে তারা আমার জন্য অপেক্ষা করেছেন। সেই সময় থেকে একটা বছর পরে এসেও যে চরিত্রটি আমার জন্য বরাদ্দ ছিল, এটা আমার সৌভাগ্য। আমার মনে হয়, চরিত্রটি ঠিকঠাকমতো করতে পেরেছি।' অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বহু কাঙ্ক্ষিত 'রঙিলা কিতাব' আজ ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পেয়েছে। দর্শক হইচই আনন্দ উল্লাস করে দেখছেন 'রঙিলা কিতাব'।

প্রশংসায় ভাসছেন পরী। তার অভিনয় দেখে অনেকেই বলছেন- এ এক নতুন পরী। পরীরর নতুন অধ্যায়। দর্শকরা প্রত্যাশা করছেন- পরী গারো এগিয়ে যাক তার অভিনয় নিয়ে। ভালো কাজ করুক।

আমরাও সেই রকম প্রত্যাশা লালনন করি পরীর জন্য। পরীর অভিনয় আকাশে সূর্য উঠুক, আলো আসুক তার স্বপ্নজুড়ে। হাতে উঠুক জয়ের মশাল। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে 'রঙিলা কিতাব'। তাই 'রঙিলা কিতাব' হোক দর্শকের মনের সিরিজ। জয় হোক 'রঙিলা কিতাব'র, জয় হোক বাংলা সিনেমার। পরীসহ ওয়েব সিরিজের সবার জন্য শুভ কামনা।

মানবকণ্ঠ/এসআর