বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নানা ইস্যুতে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট শিগগিরই কর্মসূচি ঘোষণা করবে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক শেষে ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দুই ঘণ্টাব্যাপী দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সমস্যা, সংকট এবং নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। আমি আনন্দের সঙ্গে আপনাদের সামনে ঘোষণা করতে চাই, অতি দ্রুত, অতি শিগগিরই, দুয়েক দিনের মধ্যে বা দুই তিন দিনের মধ্যে আমরা আপনাদের সামনে তথা দেশবাসীর সামনে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘বিভিন্নমুখী সমস্যা আমাদের গ্রাস করছে। ৫ আগস্ট আমাদের যে বিজয়, সেই বিজয় বিভিন্নভাবে বিপদগ্রস্ত হতে চলেছে। আমরা সবাই লক্ষ্য করছি, সবাই উপলব্ধি করছি যে, সেই জুলাই আগস্টের ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য এবং জনগণের যে সংগ্রামী মেজাজ সেটা কিছুটা হলেও হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের ঐক্যে কোথায় যেন একটু চির ধরেছে। আমরা এর সমাধান করতে চাই এবং আগামী দুইতিন দিনের মধ্যে সর্বদলীয়ভাবে আমরা জুলাই আগস্টে যেভাবে আন্দোলন করেছি এবং একত্রে ছিলাম তেমনিভাবে একত্রে থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
তিনি বলেন, ‘জনজীবনে বিরাজমান যে সমস্য, দ্রব্যমূল্যের কষাঘাত, নির্বাচন সংক্রান্ত যে কুহেলিকা, যে ভিন্ন ভিন্ন কথা-বার্তা এবং ধ্রুম্রজাল— সমস্ত কিছু সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্টভাবে আপনাদের সামনে আমরা তুলে ধরব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যে একদফার আন্দোলন করছিলাম। আগস্ট মাসের প্রথম দিকে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সেই একদফা ঘোষণা করা হয়েছিল। একদফার মূলকথা ছিল ফ্যাসিবাদের পতন এবং গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এটার একটা অংশ আমরা অর্জন করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বহু মানুষের জীবন, বহু মানুষের গুম হওয়া, বহু মানুষের নিপীড়ন এবং জুলাই আগস্টে যে গণঅভ্যুত্থান এই সময়েও আমাদের সহস্রাধিক মানুষের জীবন এবং বহু সহস্র মানুষের আহত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু, এটা একদফার একটা অংশ। আরেকটা অংশ হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা সবাই জানি যে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা মানে হল দেশে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা। আর গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু, অতি সম্প্রতি নানাজন নানা কথা বলছে। অন্যান্য নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, যেটা আমরা মনে করি যে, গোটা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্নজন বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে। আমরা মনে করি যে ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত আমরা সবাই মিলে একই ভাষায়, একই চেতনা নিয়ে কথা বলেছি। এই বিজয়টা সুসংহত করার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদ যাতে পুনঃরায় কোনো সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে, সেই জন্য আমাদের ওই ধরনের ঐক্য, ওই ধরনের চেতনা অব্যাহত রাখতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিরেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ বিকল্প ধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহ্সানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মো. ফারুক রহমান, জাগপার ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদ প্রধান প্রমুখ।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments