Image description

আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস কেবল স্বাস্থ্যের ওপরই প্রভাব ফেলে না, বরং এটি নির্ধারণ করে শরীরের নিজস্ব গন্ধ বা ‘বডি অডর’ কেমন হবে। গবেষকরা বলছেন, জিন, হরমোন বা মানসিক অবস্থার পাশাপাশি আমরা যা খাই, তা-ই আমাদের শরীরের সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ তৈরির প্রধান কারণ। খাবার হজম প্রক্রিয়া ও ঘামগ্রন্থির মাধ্যমে এই গন্ধে প্রভাব ফেলে।

আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন খাবার শরীরের গন্ধে কেমন প্রভাব ফেলে:

সালফারযুক্ত খাবার ও তীব্র গন্ধ: ব্রোকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, রসুন ও পেঁয়াজের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে। হজমের পর এসব খাবার ঘামের সঙ্গে মিশে শরীরে তীব্র গন্ধ তৈরি করে। বিশেষ করে রসুন মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করলেও, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে রসুনের প্রভাবে ঘামের গন্ধ কখনো কখনো বিপরীত লিঙ্গের কাছে আকর্ষণীয়ও মনে হতে পারে।

ফল ও সবজি আনে সজীবতা: অস্ট্রেলিয়ার ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত প্রচুর ফল ও সবজি খান, তাদের শরীর থেকে অপেক্ষাকৃত মিষ্টি ও আকর্ষণীয় ঘ্রাণ পাওয়া যায়। ফল ও সবজিতে থাকা ‘ক্যারোটিনয়েড’ যৌগ শরীরকে ভেতর ও বাইরে থেকে সজীব করে তোলে।

মাংস ও মাছের প্রভাব: প্রাণিজ প্রোটিন বা লাল মাংস ভেঙে শরীরে যে যৌগ তৈরি হয়, তা ঘামের সঙ্গে বের হয়ে দুর্গন্ধ বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, টানা দুই সপ্তাহ মাংসবিহীন খাবার খেলে শরীরের গন্ধে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে এবং তা আরও আকর্ষণীয় হয়। এছাড়া বিরল জিনগত সমস্যার কারণে মাছ খাওয়ার পর কারও কারও শরীর থেকে আঁশটে গন্ধ বের হতে পারে।

চা, কফি ও অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পানের পর তা ভেঙে শরীরে ‘অ্যাসিটালডিহাইড’ তৈরি হয়, যা ত্বক ও নিঃশ্বাসের মাধ্যমে তীব্র গন্ধ ছড়ায়। অন্যদিকে চা ও কফিতে থাকা ক্যাফেইন ঘামগ্রন্থিকে অতি সক্রিয় করে তোলে, ফলে ঘামের পরিমাণ ও গন্ধ বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার শরীরে সব খাবারের প্রভাব এক রকম না হলেও, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে শরীরের গন্ধে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাই দুর্গন্ধ এড়াতে এবং সজীব থাকতে খাবারের তালিকার দিকে নজর দেওয়া জরুরি।