Image description

পটুয়াখালীর বাউফলে জামায়াতে ইসলামীর তিন সদস্যের ওপর হামলায় ঘটনা আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ভোটের রাজনীতির জন্য ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের চিহিৃত সন্ত্রাসীদের দলে টানছেন জামায়াত। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির বিরুদ্ধে পূর্বের ন্যায় ষড়যন্ত্র করছেন।  

রোববার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আমিরাবাদ বাজারে বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সদস্য তোফাজ্জেল হোসেন তপু। 

যুবদল নেতা তপু বলেন, গতকাল আমিরাবাদ বাজারে তিনজন আহত হওয়ার ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ঘটনার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। যাদের জামায়াতের সদস্য দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা কেউ জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তাদের মধ্যে নাইম আবদুল্লাহ বাউফল উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপর দুইজন  মো. মনিরুজ্জামান ওয়াজিবুল্লাহ ও আলামনি কনকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিরন সিকদারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।  বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দমনপীড়ন ও নির্যাতন চালিয়েছেন। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তারা এখন জামায়াত হয়ে গেছেন। ভোটের রাজনীতির জন্য আওয়ামী লীগের দোসরদের জামায়াতে ইসলামী দলে টানছেন বলেও অভিযোগ করেন যুবদল নেতা তপু। 

জামায়াতের এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে তপু বলেন, জামায়াত আমাদের শত্রু নয়। বিগত দিনে বিএনপি-জামায়াত মিলে মিশে শেখ হাসিনার পতনের জন্য আন্দোলন করেছি। তখন যে সব আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করছে, নির্যাতন করেছে তাদের জামায়াতের লোক বানানোর ঘটনা আমাদের হতাশ করে। দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে হতাশ করেন। 

এ ঘটনার জের ধরে গভীর রাতে পুলিশ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছে আসছে বলেও অভিযোগ করেন কনকদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক মো.  রাশেদুল ইসলাম রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছেন। বিএনপি অফিসে এসে ডাকাডাকি করছে। এটা হতে পারে না। নতুন বাংলাদেশে পুলিশ কখনো স্বৈরাচারী কার্যকালাপ করতে পারেন না। যদি কারো বিরুদ্ধে মামলা থাকে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠাবেন। বিচার করবে আদালত। পুলিশ কাউকে হুমকি দিতে পারে না। 

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মূনঈমূল ইসলাম মিরাজ বলেন, ‘বিএনপিকে জামায়াত প্রতিপক্ষ ভাবলে ভুল করবেন। এতে আওয়ামী লীগের দোসররা সুবিধা নিবেন। জামায়াত-বিএনপি উভয় দলই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যদিও কোনো সমস্যা থাকে সেটা শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করে সমাধান করা উচিত।

এর আগে গতকাল (শনিবার) উপজেলার কনকদিয়া ইউনয়নের আমিরাবাদ বাজারে জামায়াতের তিন সদস্যের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। হামলায় জামায়াতের সদস্য মনিরুজ্জামন ওয়াজিবুল্লাহ, নাইম আবদুল্লাহ ও আলামিন অহত হন। ঘটনার দিনই বিকেলে প্রতিবাদ মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী। 

উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কনকদিয়া ইউনিয়নে জামায়াতের কর্মী সভা করার অপরাধে জামায়াতের তিন সদস্যের ওপর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রাসেলের নেতৃত্বে হামলা করা হয়।

এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কনকদিয়া ইউনিয়নে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। তবে কাউকে হুমকি দেওয়া হয়নি। পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কাউকে  হুমকি বা হয়রানি করার কোনো সুযোগ নেই।