বেদখল আর দুষণে অস্তিত্ব হারিয়ে যাওয়া বরিশাল খাল উদ্ধারে নেমেছে প্রশাসন। একদল তরুণের সহযোগিতায় শুরু হয় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নার কার্যক্রম। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে এই অভিযান চালিয়ে যাবার কথা জানায় তরুণরা। উদ্ধারের পর খালে পানি প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে খালের দুইপাড়ের বাসিন্দাদের এগিয়ে আসার আহবান জানান জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (৯ নভেম্বর) সকালে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে জাতীয় যুব দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে অংশ গ্রহণ করে যুব সংগঠন ও বিডি ক্লিন।
জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল থেকে ডাসার উপজেলার পাথুরিয়ারপাড় পর্যন্ত আট কিলোমিটার এলাকা বরিশাল খাল নামে পরিচিত। খালটি দীর্ঘদিন প্রশাসনের নজরদারির অভাবে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে । সংস্কার না হওয়ায়, দখল আর দুষণে বন্ধ হয়ে যায় খালের পানি প্রবাহ। ময়লা-আবর্জনায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। একইসাথে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা। পরে খালটি উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে শহরের কুকরাইল এলাকায় শুরু হয় কার্যক্রম। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন-এর একদল তরুণ অংশ নিতে পেরে খুশি তারা। পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরাও।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ এবং এলজিইডি’র যৌথ উদ্যোগে বরিশাল খালের দুই পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা, কচুরিপানাও পরিষ্কার করা হয়। সে সময়ে খালটি খননের উদ্যোগ নেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। শুধু পরিস্কার-পরিচ্ছনতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে আশপাশের দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তা না হলে আবারও অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে এই বরিশাল খাল।
বিডি ক্লিন-এর সদস্য মো. শাকিব হোসেন বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খাল টিকিয়ে রাখার কোন বিকল্প নেই। এজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদফতর যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে আমরা সাধুবাদ জানিয়ে তাদের সাথে কাজ করছি। এমন কাজ করতে পেরে আমরা বিডি ক্লিন-এর সদস্যরা সবাই খুশি।’
মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়নাল তালুকদার বলেন, অযত্ন আর অবহেলায় বরিশাল খালটির এখন কোন অস্তিত্ব নেই। অথচ ছোটবেলায় দেখেছি এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌযান চলাচল করেছে। এই খালটি পুনরায় পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হোক। তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানিয়া ফেরদৌস বলেন, ‘খালটির পানি প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। প্রশাসনের একার পক্ষে এমন কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আশপাশের বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে, ময়লা আর আবর্জনা খালের ভেতর না ফেললে এর পানি প্রবাহ ঠিক থাকবে।’
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments