হবিগঞ্জ শহরে একটি সরকারি খাল ভরাট করে শাস্তি স্বরূপ সেই খাল তাঁদের নিজ খরচে খনন করতে হচ্ছে । বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের এক নির্দেশে আজ বৃহস্পতিবার এ খননকাজ শুরু হয়েছে। দুই ব্যক্তির নাম সুনীল বণিক ও সৌরভ বণিক।
খননকাজ দেখতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নেতারা। পাশাপাশি কৌতূহলী মানুষের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো।
আজ দুপুরে শহরের বাইপাস সড়কের পাশে খালটিতে সরেজমিন দেখা যায়, একটি মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে খালের খননকাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। খননকাজ তদারকি করছেন সুনীল বণিক ও সৌরভ বণিকের কয়েকজন প্রতিনিধি। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হরিপদ চন্দ্র দাশ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলসহ নানা শ্রেণি–পেশার লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
হবিগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ শহরের বাইপাস সড়কের পাশে কালীগাছতলা এলাকায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আধা কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০০ ফুট প্রস্থ একটি খাল আছে। এটি শহরের পানিনিষ্কাশনের অন্যতম একটি মাধ্যম। এ খালের পশ্চিম পাশের জমির মালিক প্রবাসী সুনীল বণিক ও তাঁর ভাতিজা সৌরভ বণিক। তাঁদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সরকারি এ খালের প্রায় ২০০ ফুট ভরাট করেন। এ বিষয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জ শহরের গার্নিং পার্ক এলাকার বাসিন্দা সুনীল বণিক, তাঁর ভাতিজা সৌরভ বণিক, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও এলাকার দুলাল রায় চৌধুরী ও হবিগঞ্জ শহরের আনোয়ারপুর এলাকার জয়নাল আবেদীনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি গত ৩ অক্টোবর পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জ কার্যালয় এ বিষয়ের ওপর একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠায় পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে। সেখানে এ বিষয়ের ওপর ৬ নভেম্বর এক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জলাশয় ভরাটের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় চার ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়। তাঁদের ১০ কার্যদিবসের ভেতর নিজ খরচে খালটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আখতারুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাপার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, দায়ী ব্যক্তিরা এখন নিজ খরচে খালটি খনন করছেন। এতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করতে অপরাধীরা ভয় পাবেন।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments