ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষাপুর এলাকায় তথ্য সংগ্রহকালে হামলার শিকার হয়েছেন হাসান মাতুব্বর ওরফে শ্রাবণ এবং মো. তাওহীদুল ইসলাম ওরফে পাজবা নামে দুই সাংবাদিক। সোমবার ( ১৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই সময় দুজকে প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি করে রাখে হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় সাংবাদিক নেতা এবং প্রশাসনের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী হাসান মাতুব্বর দৈনিক আজকের পত্রিকার ও তাওহীদুল ইসলাম দৈনিক খবর বাংলাদেশ পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি।
খবর পেয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল, মধুখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুন্নু ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়। পরে তারা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
জানা যায়, হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা ও ফরিদপুর চিনিকলের সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তার ভাই মাইক্রোবাস চালক রানা মোল্যা, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান হোসেনসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন ব্যক্তিবর্গেরা।
আহত সাংবাদিক হাসান মাতুব্বর জানান, সম্প্রতি ফরিদপুর শহরে এক নারীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে সিডিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। ওই সময় তাকে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওটি আমার কাছে আসে। তখন বিষয়টি জানার জন্য ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। তখন দাবি করেছিলেন, তিনি একটি ব্ল্যাকমেইল চক্রের ফাঁদে পড়েছিলেন। এ বিষয়টি নিয়ে ফোনে বিস্তারিত বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল চক্রের তথ্য সম্পর্কে জানতে ও তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমরা যোগাযোগ করে মধুখালীতে যাই।
আহত সাংবাদিক আরও জানান, ওই ব্যক্তির সাথে কথা বলাকালীন হঠাৎ তার স্ত্রী জানতে চায়, আমাদের ভিডিও কে দিয়েছে, কোথায় আমরা ভিডিও পেয়েছি। বিষয়টি গোপনীয়তার কারণে আমরা এড়িয়ে গেলে তখন সে দাবি করে বসে আমরাই ওই ব্ল্যাকমেইল চক্র। ওই মুহূর্তেই ১০/১২ জন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং টানাহেঁচড়া করে মারধর শুরু করে। এরপরই রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আমাদের প্রায় ২ ঘণ্টা জিম্মি করে রাখে। এছাড়া মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। পরে আমাদের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার হই।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে ফরিদপুর চিনিকলের সিবিএ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শৈলেন চাকমা জানান, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে। তবে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments