কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নানা অসঙ্গতির প্রতিবাদ করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসক ডা. রেদওয়ান ফেরদৌস। এ ঘটনায় শহরজুড়ে সর্বসাধারণে সমালোচনার ঝড় বইছে। চিকিৎসকরা এমন বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কুড়িগ্রাম শাখা।
তবে হত্যার হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক ডা. রেদওয়ান ফেরদৌস।
আজ সোমবার কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য বৈষম্যবিরোধী জেলা কমিটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতাল পরিদর্শনে যায়। প্রতিনিধিরা তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাকে কক্ষে পাওয়া যায়নি। পরে প্রতিনিধি দলটি হাসপাতাল পরিদর্শনে বের হয়ে আউটডোর বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো চিকিৎসককে উপস্থিত পাননি। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রেদওয়ান ফেরদৌস বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক রাজ্য জ্যোতি, যোবায়েদ হোসেন হান্নান এবং আবরার শাহরিয়ারকে প্রশাসনিক ভবনের একটি রুমে নিয়ে যান। সেখানে তিনি তাদের হেনস্তা করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘তোমরা বেশি উড়িও না। এভাবে উড়লে মরতে হবে।’ ছাত্র প্রতিনিধিরা কে মারবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে কেউ মারতে পারে, আমিও মারতে পারি।’
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক রাজ্য জ্যোতি বলেন, ‘হাসপাতালের অসঙ্গতি সমাধানে আলোচনা জন্য গেলে তত্ত্বাবধায়ককে না পেয়ে আমরা আউটডোরে ডাক্তারদের অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করলে ডা. রেদওয়ান ফেরদৌস আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। একজন ডাক্তারের এমন আচরণে আমরা অবাক।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অপর সদস্য আবরার শাহরিয়ার বলেন, ‘একজন চিকিৎসক কীভাবে এমন হুমকি দিতে পারেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তার মতো চিকিৎসকের কারণেই হয়তো রোগীরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’
কুড়িগ্রাম জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘আমরা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এ প্রেক্ষাপটে চিকিৎসক রেদওয়ান ফেরদৌসের আচরণ অনাকাঙি্ক্ষত। আমরা তার অপসারণ চাই।’
চিকিৎসকের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষও। মোহাম্মদ তুহিন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা হাসপাতালের অনিয়ম নিয়ে কাজ করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সহযোগিতা না করে উল্টো তাদের ওপর চড়াও হয়। এটা দুঃখজনক।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ বলেন, ছাত্ররা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ করছে। তাদের সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলো, তা হতাশাজনক।
তবে চিকিৎসক রেদওয়ান ফেরদৌস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার পুলক কুমার সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহীদুল্লাহ লিংকনকে একাধিকবার করা হলেও তারা ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
Comments