Image description

মাগুরার নিজনান্দুয়ালীব গ্রামে পৌঁছাতেই ৭ বছর বয়সী এক শিশু তার বাইসাইকেল নিয়ে এগিয়ে এসে জানতে চাইলো, আপনারা কি ধর্ষণকারী হিটুর বাড়িতে যাবেন? এলাকার মানুষকে জিজ্ঞাসা করতেই সবাই এক সুরে বলে উঠলেন, হিটু শেখের বাড়ি? ধর্ষকের বাড়ি? বাড়ির কাছে গিয়ে দেখা গেল দরজায় লেখা ‘ধর্ষকের বাড়ি’।

রাজমিস্ত্রি হিটু শেখের এমন করুণ পরিণতি হওয়ার কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলছেন তার গর্হিত অপরাধের ফল। বুধবার রাতে নিজ পুত্রবধূর আট বছর বয়সী বোনকে ধর্ষণ করে হিটু শেখ। শুধু ধর্ষণ নয়; ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টাও চালায় সে।

ধর্ষক হিটু শেখের বাড়িতে প্রবেশ করতেই দেখা গেলো, বাড়ির সামনে গাছের নিচে ঘুমিয়ে আছে হিটু শেখের বৃদ্ধা মা। প্রতিবেশীরা জানালেন, বাড়ির চার জনকে গ্রেফতার করার পর এ বাড়ি এখন ফাঁকা। শুধু হিটু শেখের বৃদ্ধা মা গাছের নিচে কিংবা বারান্দায় দিনরাত ঘুমিয়ে থাকে।

প্রতিবেশীরা বাড়ির দরজায় চক দিয়ে লিখে দিয়েছে ধর্ষণকারী হিটু শেখের বাড়ি। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেলো, পুরো পরিবারটিই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সঙ্গে থেকেই যুক্ত। এর আগেও হিটু শেখ এ ধরনের কাজ করেছে কিন্তু তার পরিবার এসব বিষয় ধামাচাপা দিয়ে এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিবেশী জানান, হিটু শেখের পুরো পরিবার ধর্ষণের সাথে যুক্ত। শিশুটির বোনের স্বামী, দেবর, শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই এ ঘটনায় জড়িত বলে মনে হয়েছে। ঘটনার দিন সকালে পরিবারের সকলের আচরণ ছিল সন্দেহজনক।

প্রতিবেশী রিমন মিয়া বলেন, ‘এই পরিবার বহু আগে থেকেই এরকম অপকর্মে জড়িত। আমরা এদের ফাঁসি চাই।’

আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার বাচ্চারাও বড় হচ্ছে। এই ঘটনার বিচার না হলে ভবিষ্যতে আমাদের শিশুদের নিরাপত্তা থাকবে না।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৫ মার্চ) বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছরের ওই শিশু। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকার সিএমএইচে লাইফ সাপোর্টে রয়েছে।

এ ঘটনায় শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজীব শেখের ভাই রাতুল শেখ (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪০) রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।   

মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী বলেন, ‘মাগুরা পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনী হিটু শেখের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে। বাড়িটি এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে আছে।’

মানবকণ্ঠ/আরআই