Image description

ফতুল্লায় গৃহবধূ লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছেন করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

মানববন্ধনে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, শামীম ওসমানের ক্যাডার সন্ত্রাসী চুন্নুর বন্ধু সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিন ওরফে ককটেল রবিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৬ ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তারা গৃহবধূ লামিয়া হত্যা মামলা ধামাচাপা দিতে একসাথে বিশাল টাকা বিনিয়োগ করছে। গৃহবধূ লামিয়া আক্তার হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব থেকে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া ছাত্র-জনতা ৬ হত্যা মামলার আসামি ককটেল রবিনকে বহিঃষ্কারের করতে হবে।  

লামিয়ার বাবা ও মামলার বাদী মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমার মেয়ে লামিয়া হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে ছাত্রহত্যা মামলার আসামি ককটেল রবিনের সহযোগিতায় মামলা অন্যদিকে নেয়া চেষ্টা করছে। মামলার প্রধান আসামিদের ধরছে না। ককটেল রবিন, চুন্নুর মতো সন্ত্রাসীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলার আসামি হয়েও কী করে নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রাখলাম। ককটেল রবিন হত্যা মামলার আসামি তোফাজ্জলের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে মামলা নষ্ট করার পায়তারা করছে। প্রশাসনের কাছে বলবো, সন্ত্রাসী চুন্নু, তোফাজ্জল, প্রধান আসামি মুন্না, আকলিমা, মনু, মুন্নি, মনির হোসেনকে গ্রেফতার চাই। ফতুল্লা থানায় আরও তিনটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যে মূল আসামিদের গ্রেফতার করেছে পুুলিশ। অথচ আমার মেয়ে হত্যার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে প্রত্যেক দফতরে দফতরে গিয়ে কান্না করতে হচ্ছে।

মানববন্ধনে লামিয়ার বড় ভাই আরাফাত আল ফাহিম বলেন, ‘গত ২ জানুয়ারি লামিয়াকে তার স্বামী আসাদুজ্জামান মুন্না ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্মমভাবে হত্যা করে। এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য তারা লাশ ঘরের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরোধে হত্যার সত্যতা পাওয়ায় থানায় মামলা করা হয়। এ ঘটনার পর আসামিরা সবাই পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদের কাউকে ধরতে পারছে না। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।’

এ সময় ককটেল রবিন, সন্ত্রাসী চুন্নসহ সকল আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ঝাড়ুমিছিল ও জুতামিছিল করে এলাকাবাসী ও নিহতদের স্বজনরা।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি রাতে ফতুল্লার লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকায় শ্বশুরবাড়ির জানালার গ্রিল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লামিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় তার স্বামী আসাদুজ্জামান মুন্নাসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই আত্মগোপনে ছিলেন। নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক জেনে প্রতিবাদ করায় লামিয়াকে হত্যা করা হয়। ৬ জানুয়ারি ময়নাতদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে। ৭ জানুয়ারি লামিয়ার বাবা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।