মা-মেয়েকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ

কুড়িগ্রামে মা-মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগে মাইকিং করে দুই গ্রামের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এলাকাবাসী সূত্র জানা যায়, গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) চিলমারী রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া গ্রামের পশির উদ্দিনের মেয়ে ও স্ত্রী দ্বিতীয় তিস্তা সেতুতে ঘুরতে গেলে গাইবান্ধার সুন্ধরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শহরের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল ও সুমন নামের তিন যুবক গোপনে ছবি তোলেন এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন। পরে মা মেয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করার সময় ওই কিশোরেরা তাদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ডাঙার চর এলাকার হামেদ আলীর ছেলে সাজু ও রোস্তাম আলীর ছেলে মোতালেব মিয়ার চোখে পরলে তারা বিষয়টির প্রতিবাদ করে। এতে শহরের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল, সুমনসহ কয়েকজন মিলে চিলমারী উপজেলার এই দুই যুবকের উপর চরাও হয় এবং তাঁদের মারধর করেন। পরবর্তীতে তারা মারধরের বিষয়টি এলাকায় জানালে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পর আজ বৃহস্পতিবার ( ১০ এপ্রিল) সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫) তার ভুট্টা ক্ষেত দেখতে গেলে শহরের মোড় এলাকার ফখরুলের ছেলে মিস্টারসহ কয়েকজন ব্যক্তি মিলে তাকে বেধরক মারধর করে। পরে আলমগীর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় ব্যক্তিরা পরিবারকে ফোনে মারধরের কথা জানায়। খবর পেয়ে পরিবারসহ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়েছে।
পরে ওই ঘটনায় দুই গ্রামের মানুষ মাইকিং করে তাঁদের লোকজনকে ডেকে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় গ্রামের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। এসময় শহরের মোড় থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২টি টেটা, বাই সাইকেলের ক্রাং ও বিপুল পরিমান লাঠি উদ্ধার করে।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম জানান, ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এরমধ্যে চিলমারী উপজেলার লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেনকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাইকিং করে পূর্ব পরিকল্পিত মারামারির বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু বলেনি। এখন উভয় গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
Comments