রাবিতে কলেজ শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় প্রক্টরসহ ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কলেজ শিক্ষার্থী মো. শিমুলের (১৮) মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১০টায় নগরীর মতিহার থানায় নিহতের পিতা মো. জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে শারীরিক নির্যাতনে শিমুলের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মালেক।
মামলার এজাহারে বাদী শিমুলের পিতা উল্লেখ করেন, গত ২৩ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে দিয়ে মোটর সাইকেলে যাওয়ার সময় ড. কুদরত-ই-খুদা একাডেমিক ভবনের কাছাকাছি আসলে বিশ্ববিদ্যালয় অজ্ঞাতনামা সহকারী প্রক্টর আমার ছেলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তার পরিচয় জানতে চায়। তিনি মেহেরচন্ডির বুধপাড়ার বাসিন্দা পরিচয় দিলে সহকারী প্রক্টর 'বহিরাগত ধরধর' বলে চিৎকার করেন। এ সময় পেছন থেকে কিছু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিমুলকে ধাওয়া করলে তিনি সামনের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে ৩য় বিজ্ঞান ভবনের দিকে যায়। পরে তখন ৩য় এবং ৪র্থ বিজ্ঞান ভবন এর মাঝে উপস্থিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহকারী প্রক্টরের নির্দেশে এবং নেতৃত্বে সামনের অন্য পাশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তার ছেলে শিমুলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করতে ধাওয়া দিয়ে আসে। এ সময় এক শিক্ষার্থী ব্যাডমিন্টন ব্যাট দিয়ে পেছন থেকে ঘাড়ে আঘাত করলে শিমুল মোটরসাইকেল থামিয়ে দেয়।
এজাহারে শিমুলের পিতা আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনার এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলকে সহকারী প্রক্টরের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে তাকে নামিয়ে ৩য় বিজ্ঞান ভবনের গেট থেকে পশ্চিমে ৩৫ গজ দূরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন। এ সময় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাক্ষী মিষ্টিসহ কয়েকজনের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। তবে, সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিমুলের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত রামেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্সে করে শিমুলকে রামেকের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার অন্যতম সাক্ষী ও শিমুলের সঙ্গে থাকা তার বান্ধবী জান্নাতুল ফেরদৌস মিষ্টিকেও মারধর করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, শিমুলের সাথে থাকা মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মিষ্টিকে মোটরবাইক থেকে নামিয়ে আলাদা করে নিয়ে সহকারী প্রক্টর মেয়েটিকে চড়-থাপ্পড় মারেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মালেক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, 'গতকাল রাতেই নিহতের পিতা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ছাড়াও আদালতের অনুমতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের থেকে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।'
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments