Image description

রাজধানীর বনানীতে ৯ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মামলার ৪ দিন পরও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তিকেও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিকে চিহ্নিত করতে ওই এলাকার রাস্তাঘাটের সব সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এদিকে শিশুটি গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, ১৪ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন ২০২০-এ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলার অজ্ঞাতনামা আসামিকে শনাক্তের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ওই এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী শিশুটি স্পষ্ট করে বলতে পারছে না ঘটনাটি কখন। একেকবার বলছে রাতে, একেকবার বলছে দিনে। আসলে আমরা সবদিক দিয়ে তদন্তে এগোচ্ছি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলের শিশু সার্জারি বিভাগে গিয়ে কথা হয় পাশে থাকা শিশুটির মায়ের সাথে। তিনি বলেন, তারা থাকেন বনানী এলাকার একটি বস্তিতে। শিশুটির বাবা রিকশাচালক আর মা গৃহিণী। ৯ বছরের মেয়ে শিশুটি কিছুই করে না। ৬ মাস বয়সী আরেকটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাদের।

তিনি বলেন, ১২ অক্টোবর রাতে তাদের মেয়ে বাসা থেকে পূজা দেখতে বের হয়েছিল। ওই রাতে আর বাসায় ফেরেনি সে। এজন্য বাবা মা দুজনই তাকে সারারাত খোঁজাখুঁজি করে। পরদিন বেলা ১১টার দিকে শিশুটি একাই ঘরে ফিরে। কই গিয়েছিল জানতে চাইলে তখন কিছুই বলেনি শিশুটি। পরে শিশুটিকে গোসল করাতে নিয়ে গেলে মা তার শরীরে রক্ত দেখতে পান। সেই সময় মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে সবকিছু বলতে থাকে।

শিশুটির বরাত দিয়ে তার মা বলেন, ওই এলাকায় একটি পূজামণ্ডপে আরেকটি মেয়ে শিশুর সাথে যখন ঘুরছিল, তখন এক ব্যক্তি একটি ব্যাগ পাহারা দিতে বলে তাদের দুজনকে। সেজন্য ২০টি টাকাও দেয়। পরে ওই লোক ভুক্তভোগী শিশুটিকে বলে, ব্যাগসহ তাকে এগিয়ে দিতে। সেজন্য ২০০ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখায়। তখন একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে নিয়ে যায় তাকে। তবে সেটি কোন এলাকা তা বলতে পারেনি শিশুটি। সেখানে একটি ভাঙারি কারখানার পাশ দিয়ে একটি বাড়ির ৩য় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে রাতে তাকে ধর্ষণ করে। সকালে ওই লোক যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন শিশুটি চেয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে সিটকিনি খুলে বেরিয়ে আসে। তবে তার কিছুক্ষণ পর ওই লোকও তাকে খুঁজতে খুঁজতে রাস্তায় চলে আসে আর তাকে খুঁজেও পায়। তখন একটি বাসে উঠিয়ে দেয় শিশুটিকে।

শিশুটির মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার এইটুকু মেয়ে, এত বড় ক্ষতি করল। আমি তারে পাইলে নিজের হাতে বিচার করতাম। 

শিশু সার্জারি বিভাগের দায়িত্বরত এক নারী চিকিৎসক বলেন, শিশুটির যৌনাঙ্গ ও মলদ্বার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেজন্য পেট দিয়ে মল বের হওয়ার রাস্তা করে দেয়া হয়েছে। পরে কয়েকটি অস্ত্রোপচার করার পর ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ ঠিক হলে মলদ্বার আগের জায়গায় সংযোগ করে দেয়া হবে। তবে শিশুটির ট্রমার মধ্যে রয়েছে।