Image description

সরকারের পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে গত ৫ অগাস্ট পঞ্চগড়ের আহমদনগরে আহমদীয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় আহত কিশোর শাহরিয়ার রাকীন মারা গেছেন।

১৬ বছর বয়সী শাহরিয়ার আহত হয়ে তিন মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার সকালে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত এক বিবৃতিতে বলেছে, সেদিনের হামলায় কোনো ‘রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না’, বরং দেশে আইন-প্রশাসন এবং সরকারের অনুপস্থিতিতে ‘ধর্মীয় উগ্রবাদীরা’ ওই হামলা চালায়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শাহরিয়ারের বাবা মো. আব্দুল ওহাব বলেন, “সকাল ১০টার দিকে শাহরিয়ার মারা গেছে। কাগজপত্র ক্লিয়ার করতে দেরি হওয়ায় এখনও তাকে হাসপাতাল থেকে বের করতে পারিনি। হাসপাতাল থেকে তাকে আমরা গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাব, সেখানেই তার দাফন হবে।”

ওহাবের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে তৃতীয় সন্তান শাহরিয়ার স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়তেন।

এদিকে শাহরিয়ার রাকীনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ‘বর্বরোচিত সাম্প্রদায়িক আক্রমণের’ তীব্র নিন্দা ও বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত।

সংগঠনটির বহিঃসম্পর্ক, গণসংযোগ, প্রেস ও মিডিয়া সম্পাদক আহমদ তবশির চৌধুরীর পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, “গত ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পরপরই কতিপয় উগ্র ধর্মীয় আগ্রাসীর আক্রমণে সারা বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি স্থানে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের সদস্যদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। ওইদিন বিকেলে পঞ্চগড়ের আহমদনগরে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের মসজিদ এবং শতাধিক ঘরবাড়ি এবং স্থাপনায় আক্রমণে ২২ জন আহত হন।

“এর মধ্যে শাহরিয়ার রাকীন মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাকে প্রথমে স্থানীয় পঞ্চগড় সরকারী হাসপাতাল, পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেষে ডাক্তারের পরামর্শে ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়।

“৭ অগাস্ট থেকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ল্যাবএইড হাসপাতাল এবং পুনরায় ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে দীর্ঘ তিনমাস চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার সকালে শারিয়ার মারা যান।”

৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তি ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন রাতের মধ্যেই অন্তত ২৯ জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার তথ্য জানিয়েছিল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

মানবকণ্ঠ/আরআই