মহাখালী মোড় অবরোধ করে সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে রেলসহ সব ধরনের যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখে ব্যাটারিচালিত রিকশা-চালকরা। তাদের অনড় অবস্থানে স্থবির হয়ে পড়ে মহাখালীসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। সব যানবাহন দীর্ঘ-লাইনে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকেন দীর্ঘক্ষণ। তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের রেললাইন অবরোধের কারণে কোনো ট্রেন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়নি। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
সর্বশেষ দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা পর আন্দোলনকারী রিকশাচালকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর মহাখালী এলাকায় আবারও যান চলাচল শুরু হয়েছে।
বিকেল ৩ টার দিকে যান চলাচল শুরু হয় মহাখালী এলাকায়। সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর দুইটার পর থেকে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা মহাখালী এলাকায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একপর্যায়ে বিকেলে পৌনে তিনটার দিকে মহাখালী এলাকায় প্রায় একশ জনের মতো অটোরিকশাচালক ছিলেন। তাদের পুলিশ ও সেনাবাহিনী সারিবদ্ধভাবে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাধার মুখে রাস্তা থেকে সরে যান আন্দোলনরত চালকরা। তারা রাস্তা থেকে সরে গেলে একদিকে যেমন মহাখালী রেল লাইনের অবরোধ শেষ হয় তেমনি রাস্তার অবরোধ শেষ হয়। পরে বিকেল তিনটা থেকে মহাখালীর সব রাস্তায় যান চলাচল শুরু হয়। তবে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা সড়ক অবরোধের ফলে যানজট চারদিকে ছড়িয়ে যায়। যান চলাচল শুরু হলেও যানজট কমেনি।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবরোধ তুলে নিতে বললে রিকশাচালকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। পরে রিকশাচালকরা রেললাইনের পাথর দিয়ে মহাখালী এসকেএস শপিং মল, রাওয়া ক্লাব ও সিটি ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ ভাঙচুর করে।
সকাল থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, নাখালপাড়া এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ফলে সেসব এলাকায় যানজট তৈরি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উচ্চ আদালত থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ আসে ১৯ নভেম্বর। প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে হাইকোর্ট।
আদালত বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এটা পুরোপুরি অবৈধ। এর পরদিনই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রিকশাচালকরা।
Comments