শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভা বৈষম্যবিরোধী একাংশের বাধার মুখে ভণ্ডুল হয়ে গেছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমি প্রাঙ্গণে ওই মতবিনিমিয় সভা শুরু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা ও ময়মনসিংহ থেকে আগত ১২ সদস্যের সমন্বয়ক দলের সদস্যরা আসন গ্রহণ করার পর স্লোগানের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। এ সময় শেরপুরের স্থানীয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মোজাম্মেল হক লিটনের নেতৃত্বে একদল ছাত্র সভাস্থলে এসে তাদের কেন এ অনুষ্ঠানের বিষয়টি জানানো হলো না-তা জানতে চান।
একই সঙ্গে আয়োজনকারীদের চাঁদাবাজ ও ফ্যাসিবাদী ছাত্রলীগের দোসর বলে আখ্যায়িত করে সভামঞ্চের ব্যানার ও ডেকুরেশন ছিঁড়ে ফেলে মতবিনিময় সভা ভণ্ডুল করে দেন। এ সময় সভায় উপস্থিত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ আতঙ্কে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমানসহ ঢাকা ও ময়মনসিংহ থেকে আগত ১২ সদস্যের সমন্বয়ক দলের সদস্যরা অনুষ্ঠানস্থলের পাশে বিদ্যালয়ে একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। কিছুক্ষণ পর অনুষ্ঠানস্থলে সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশের সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে ঢাকা থেকে আগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে পুনরায় মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা শেরপুরে একটি শান্তিপূর্ণ মতবিনিময় সভা করতে চেয়েছিলাম। শেরপুরে যারা শহিদ হয়েছেন আমরা তাদের পরিবারের প্রত্যেকের সঙ্গে বসেছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে বসেছি।
তিনি সভা ভণ্ডুলকারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি মনে করেন শেখ হাসিনা বিদায়ের পরেও নতুন করে ফ্যাসিবাদ তৈরি করবেন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা তা মানবে না। সভার প্যান্ডেল ভাঙার নেতৃত্ব দিয়েছেন জাকিয়া পারভিন। তাকে গ্রেফতার করা না হলে আমরা অনশনে বসব।
একই মঞ্চে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মোজাম্মেল হক লিটন বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি, রক্ত দিয়েছি, আহত হয়েছি। আমাদের বাদ দিয়ে এ সভা হতে পারে না। এছাড়া তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথা বলে চাঁদা সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ভালো না। এগুলোর একটা সঠিক হিসাব আমাদের দিতে হবে। কোনো চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ কোনো আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী, কোনো ছাত্রলীগ বাহিনী এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে থাকতে পারবে না।
বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ থেকে আগত ১২ সদস্যের সমন্বয়ক দলের সদস্যরা সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
Comments