Image description

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ধামরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, এদিন সকালে ঢাকার ধামরাইয়ের মোকামটোলা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

নিহত শামীম সাভারের আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার মোল্লা বাড়ির ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯ ব্যাচ) ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। 

আটক হাবিবুর রহমান হাবিব ধামরাই পৌর এলাকার মোকামটোলা লাবু খানের ছেলে এবং ধামরাই কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

মুঈদ বলেন, সম্প্রতি শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় পোশাক শিল্পে অস্থিরতা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড—এই দুটি ঘটনাই অস্বাভাবিক। নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুসারে দুটি ঘটনার সঙ্গে হাবিবুর রহমান হাবিবের সংশ্লিষ্টতা আছে। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বর্তমানে তাকে আশুলিয়া থানায় রাখা হয়েছে। 

এর আগে শামীমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার সুদীপ্ত শাহীন বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। যা শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোরে নথিভুক্ত হয়। মামলায় ৮ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাজন মিয়া, একই বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের রাজু আহাম্মদ, ইংরেজি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের মাহমুদুল হাসান রায়হান, ইতিহাস বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের জুবায়ের আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের হামিদুল্লাহ সালমান, ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের আতিকুজ্জামান আতিক, কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সোহাগ মিয়া ও বায়োটেকনলজি অ্যান্ড জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের আহসান লাবিব।

মামলার বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সুদীপ্ত শাহীন গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ১২টার দিকে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি। পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার রাতেই এই আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম রাশিদুল আলম গণমাধ্যমকে টেলিফোনে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো অনুমতি এখন পর্যন্ত চাওয়া হয়নি। তারা (পুলিশ) যদি আনুমতি চায়, তাহলে আমরা বিষয়টি দেখব। 

তবে মুঈদ বলেন, যারা অপরাধী তাদের জন্য তো কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই। 

এর আগে গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জয় বাংলা’ ফটক এলাকায় শামীম মোল্লাকে মারধর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রক্টরিয়াল বডি’র হাতে তুলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আশুলিয়া থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এরপর রাত ৯টার দিকে চিকিৎসার জন্য সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।


মানবকণ্ঠ/এফআই