Image description

ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজাভোগ শেষে কারাগার থেকে বাড়িতে ফিরে এক যুবলীগ কর্মী আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে আক্কেলপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

ওই যুবলীগ কর্মীর নাম আজমল হোসেন (মদন)। তিনি বিষ্ণপুর গ্রামের আজিজার রহমান ছেলে। আজমল হোসেন বিবাহিত ছিলেন। তাঁর দুই সন্তানও আছে। তিনি পেশায় মৎস্যচাষি ছিলেন। তিনি আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মী ছিলেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিলকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান (দিপু)।

স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজমল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন। পরিবারের লোকজন বারবার চেষ্টা করেও তাঁকে মাদকা সেবন থেকে ফেরাতে পারেননি। ফলে পরিবারের লোকজন তাঁর ওপর অতিষ্ঠ ছিলেন। ২ অক্টোবর বাড়িতে মাদক সেবন করার সময় পরিবারের সদস্যরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনকে খবর দেন। তাঁরা এসে আজমলকে হাতেনাতে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক তাঁকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন। গতকাল বুধবার সাজাভোগ শেষে কারাগার থেকে বাড়িতে ফিরে আজমল ঘুমিয়ে পড়েন। বিকেলে ঘুম থেকে উঠে নাশতা করে আবারও ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যান। সন্ধ্যা পার হয়ে গেলেও তিনি ঘুম থেকে উঠছিলেন না। তখন পরিবারের লোকজন ঘরের দরজায় গিয়ে অনেক ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ঘরের দরজা ভেঙে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় আজমলের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে গতকাল রাতে পুলিশ এসে লাশটি হেফাজতে নেয়। আজ বৃহস্পতিবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে।

আজমল হোসেনের ভাতিজা নাঈম হোসেন বলেন, ‘আমার চাচা মাদকাসক্ত ছিলেন। নিজ বাড়িতে মাদক সেবন করার সময় তাঁকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাঁর ১৫ দিন সাজা দেওয়া হয়। সাজাভোগ শেষে গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চাচা বাড়িতে আসেন। সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।’

তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আতাবুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ মাদক খায় না, মানুষকেই মাদক খেয়ে নেয়। তাঁর বড় প্রমাণ আজমল হোসেন। তিনি ভালো ছেলে ছিলেন। মাদকাসক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন শেষ করলেন। গতকাল ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৫ দিনের সাজাভোগ শেষে বাড়িতে এসেছিলেন।’

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ময়নুল ইসলাম বলেন, আজমল হোসেন আত্মহত্যা করেছেন বলে উল্লেখ করে তাঁর বাবা থানা একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।

মানবকণ্ঠ/এসআরএস