Image description

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেনকে চাঁদাবাজি, পুকুরের মাছ লুট, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও দাপটের অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের নির্দেশে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

১২ অক্টোবর উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নের পোড়াকয়া গ্রামের রুবেল হক তাঁর পুকুরের মাছ লুটের ঘটনায় মহব্বত হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দিন ছাত্রদল নেতা মহব্বত হোসেনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী তাঁকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে দুটি পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এর আগে থানায় রুবেল হক মহব্বত হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মাছ লুটের সময় তিনি সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছিলেন। পরে কিছু মাছ পুলিশ ও সেনবাহিনী জব্দ করে।

দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজন জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে মামলায় জড়ানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে ও স্থাপনায় হামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার অভিযোগ ওঠে। তিনি দলবল নিয়ে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা উপজেলার কুমান্নিতলা হাট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খাজনা আদায় শুরু করেন। তবে এক মাস পর হাটটি উপজেলা প্রশাসন ইজারা দেয়। এ ছাড়া মাদারীগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, চান্দেরআড়া ও পোড়াকয়া এলাকার আওয়ামী লীগ সমর্থক কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মহব্বত মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

২০২০ সালের ৮ আগস্ট মহব্বত হোসেনকে আহ্বায়ক করে বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে তিনি দলীয় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে মন্তব্যের কারণে দলীয় এক কর্মীকে মারপিট করে মুঠোফোনে তা স্বজনদের শোনান মহব্বত। 

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রদল নেতা মহব্বত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোনের সংযোগ বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে এর আগে পুকুরের মাছ লুটের অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না। দলীয় গ্রুপিংয়ের শিকার বলে তিনি দাবি করেছিলেন।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম ছাত্রদল নেতা মহব্বতের বিরুদ্ধে থানায় মাছ লুটের অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ছাত্রদল রাজশাহী জেলা শাখার সদস্যসচিব আল-আমিন বলেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তাঁর (মহব্বত হোসেন) বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে তাঁরা জেনেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে আল-আমিন জানান।