Image description

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদের জামিন মঞ্জুরের প্রতিবাদে বিচারককে প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের জের ধরে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সি আবদুল মজিদ হত্যাসহ তিন মামলায় মাসেদুল হকের জামিন মঞ্জুর করেন। এর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১২ টার দিকে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বিচারককে প্রত্যাহারের দাবি জানান। এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা বক্তব্য দেন।

যদিও মঙ্গলবার মাসেদুল হক রাশেদের পক্ষে আদালতে জামিন শুনানিতে বিএনপি-জামায়াতের অনেক আইনজীবী অংশ নেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সিদ্দিকীর জিম্মায় আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। মামলাটির জামিন শুনানিতে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম সিদ্দিকী ছাড়াও জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধরী, আবদুল মান্নানও ছিলেন। আবুল কালাম সিদ্দিকী বিএনপি-জামায়ত সমর্থিত প্যানেলে আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৫। পরে তাকে তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ১৭ আগস্ট কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায়ও অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মাসেদুল হক রাশেদকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল।

এদিকে, বুধবার তার জামিনের বিষয়টি জানা-জানি হওয়ার পর দুপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আদালতে যান। এ সময় আদালত তারা বিচারক প্রত্যাহারের দাবি জানান। শিক্ষার্থী ও আইনজীবীরা বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে গিয়ে বিচারকরা ছাত্র-আন্দোলনে হামলাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে জামিন দিয়েছেন। এতে তাদের দ্রুত পুনর্বাসনের সুযোগ হবে।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সিদ্দিকী জানান, রাশেদকে যে তিনটি মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয় ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন তিনি। সেইসঙ্গে রাশেদ গুরুতর অসুস্থ বলে আদালত কারা কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে জানিয়েছে। সব বিবেচনায় আদালত মামলাগুলোতে রাশেদেকে তার জিম্মিয় জামিন দিয়েছেন। এটা ন্যায় বিচারের অংশ।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে আমি নিজেও মামলার আসামি হয়ে কারাভোগ করেছি। অ্যাডভোকেট মান্নানসহ আর অনেক আইনজীবীও কারাভোগ করেছেন। ওই সময় আমাদের জামিনের ক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থায় নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল। এখন কিন্তু সেটা করা ঠিক হবে না। বিচারিক ব্যবস্থাকে আইনের গতিতে চলতে দিতে হবে।’

মানবকণ্ঠ/এসআরএস