ঢাকার ধামরাইয়ে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী-সন্তানের সামনেই চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত কুলসুম আক্তারের (৩০) ভাই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
নিহত কুলসুম ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকার ইয়ার হোসেনের স্ত্রী। তিনি পাঁচ বছরের এক ছেলের মা ও চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কুলসুমের নানি শাশুড়ি আমিনা খাতুন (৬০) গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমিনা উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের বান্নাখোলা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ১০-১২ দিন আগে মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন।
মামলায় আমিনা ছাড়াও কুলসুমের শ্বশুর আয়নাল পাগলা (৫৫), শাশুড়ি সূর্য বানু (৪৫) ও ভাতিজি ইয়াসমিন আক্তারের (১৯) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
নিহতের স্বজন ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ছয় বছর আগে ইয়ার হোসেনের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া এলাকার হাসান আলীর মেয়ে কুলসুমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ করত। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে শাশুড়ির রান্নাঘরে কুলসুমের মুরগি যাওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কুলসুমকে তাঁর স্বামী ইয়ার ও ছেলে ইয়াসিনের সামনেই শ্বশুর আয়নাল, শাশুড়ি সূর্য, নানি শাশুড়ি আমেনা খাতুন, ভাতিজি ইয়াসমিন শ্বাসরোধ করে ও বুকের ওপর উঠে ইট দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় ইয়ার থামাতে গেলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে তারা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই কুলসুমের মৃত্যু হয়। কুলসুমের ডান চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম, মুখ, পিঠসহ সারা গায়ে জখমের চিহ্ন দেখা গেছে।
ইয়ার হোসেন জানান, তাঁর স্ত্রীর পালন করা একটি মুরগি রান্নাঘরে গিয়ে তাঁর মায়ের আটা নষ্ট করে। এ কারণে তাঁর সামনেই তাঁর মা-বাবা, নানি ও ভাতিজি মিলে কুলসুমকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তিনি থামাতে গেলে তাঁকেও পিটিয়েছে। কুলসুসের ভাই ইকবাল হোসেন তাঁর বোনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
খবর পেয়ে ধামরাই থানার এসআই আজাহারুল ইসলাম গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন।
ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলেহের জেরে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনের নামে মামলা হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments