রাজশাহীর বাগমারায় তোকিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল ও কর্মচারীকে মারপিটের প্রতিবাদ করায় উল্টো হামলার শিকার হয়েছে বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীরা হামলাকারী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে হামলাকারী ব্যক্তিদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা প্রথমে তাঁদের ওপর হামলা করেছে।
থানায় দেওয়া অভিযোগ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয় চলাকালে বহিরাগত সোহেল রানার নেতৃত্বে একদল লোক লাঠি হাতে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। তাঁরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকে তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এ সময় তিনি প্রতিষ্ঠানের বাইরে ছিলেন। তাঁকে না পেয়ে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন তাঁরা। সেখানে থাকা চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারীকে মারধর করেন। তাঁর চিৎকারে নবম ও দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তারা প্রধান শিক্ষককে গালাগাল ও কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলা করা হয়। এতে ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে হামলাকারীরা বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
আহত দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বহিরাগত ব্যক্তিরা লাঠি নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষককে গালাগাল ও হুমকি দেন। এ ছাড়া এক পিয়নকে মারধর করেন। তারা এর প্রতিবাদ করলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকাশ হোসেন বলেন, হামলাকারী ব্যক্তিরা স্থানীয় লোকজন। যেভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় বিদ্যালয়ে এসে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছেন, এতে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। হামলাকারী ব্যক্তিরা আটক না হলে আগামী রোববার থেকে ক্লাস বর্জন করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে বহিরাগত সোহেল রানা বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া আছে। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীরাই প্রথমে আমাদের গায়ে হাত তুলেছে। ওই সব শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’
প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ের অভিযোগটি মীমাংসিত। এর পরেও আমাকে মারার জন্য এসে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীকে মারপিট করেছেন তাঁরা। পুলিশ ছাড়াও শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাটি জানিয়েছি।’
হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক আকরাম আলী বলেন, গতকাল ঘটনার সময় পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। থানায় যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা এখনো পৌঁছায়নি। পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments