Image description

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায়  বগুড়ার আলোচিত তুফান সরকারের ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ১৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ ছিল। দুদক বগুড়ার আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তুফান সরকার বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর রহমান সরকারের ছেলে এবং সাবেক কাউন্সিলর মতিন সরকারের ভাই। তিনি বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের সদস্য ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনসহ ১৯টি মামলা রয়েছে। ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ২০১৭ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তুফান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে আছেন।

স্থানীয়রা জানায়, ২০১৭ সালে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন তুফান সরকার। সেই ঘটনা জানাজানি হলে ভুক্তভোগী তরুণী ও তার মাকে ‘চরিত্রহীন’ আখ্যা দিয়ে তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেন তুফান। পরে পুলিশ তুফানকে আটক করে। সেই সময় তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। বিষয়‌টি আম‌লে নি‌য়ে তদ‌ন্ত শুরু হয়। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, তুফান সরকারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ সালের মার্চে দুদক থেকে তাঁর কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই মাসেই দুদকে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকার স্থাবর ও ৩৮ লাখ ৯ হাজার ১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেওয়া হয়। সম্পদ যাচাই করে দুদক তুফানের জমি, বাড়ি, গাড়ি, ব্যাংকে সঞ্চয়সহ ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ১৮২ টাকা মূল্যের সম্পদের সন্ধান পায়। তাঁর আয়ের বৈধ কোনো উৎস ও তিনি কোনো আয়কর রিটার্ন দাখিল কিংবা কোনো খাতের আয় প্রদর্শন ও আয়কর পরিশোধের প্রমাণ দিতে পারেননি। এ কারণে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে বগুড়া সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬ ও ২৭ (১) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে তদন্ত শেষে দুদক তুফান সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
 
দুদক বগুড়ার আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, মামলায় দুটি ধারায় তুফান সরকারের ১৩ বছরের সাজা হয়েছে। এছাড়াও তার অবৈধ সম্পদ ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ১৮২ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তুফান সরকার বর্তমানে পলাতক। গ্রেপ্তারের পর থেকে এ দণ্ডাদেশ কার্যকর হবে।

মানবকণ্ঠ/এসআর