সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না সেতু, ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ
চাঁদপুরের মতলব পৌরসভায় ব্রিজের দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গার্ডার ব্রিজ। আর এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরসভার চরমুকুন্দি, শীলমন্দি, ঢাকিরগাঁও, নবকলস, উদ্দমদী, কাজিরবাজার, শোভনকর্দীসহ ১০ গ্রামের প্রায় ২৫/৩০ হাজার মানুষ। বর্তমানে স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে ব্রিজের পাশেই বাশেঁর সাকো দিয়ে কোনোরকমে ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে দীর্ঘদিন ধরে।
জানা যায়, চাঁদপুরের মতলব পৌরসভার চরমুকুন্দি এলাকায় মতলব-বাবুরহাট খালের উপর ২০২১-২২ অর্থ বছরে সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উদ্যোগে ৫০ ফুট দীর্ঘ ও ১৪ ফুট চওড়া ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব পায় চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। পরে ওই ব্রিজের নির্মাণ কাজ লটারির মাধ্যমে গোলাম মোস্তফা নামে এক ঠিকাদারকে দেওয়া হয়। ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হলেও তার দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজ না করেই উপজেলার সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম খানকে ম্যানেজ করে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে জামানতের টাকা উত্তোলন করেন গোলাম মোস্তফা। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরেও ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করতে পারেনি স্থানীয় এলাকাবাসী।
সরেজমিনে জানা যায়, এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন মতলব শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ চলাচল করে। কিন্তু ব্রিজটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে ব্রিজের পাশেই বাশেঁর সাকো দিয়ে কোনোরকমে ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে। আর এই বাশেঁর সাকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বৃদ্ধ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাকো থেকে পরে মারাত্মক আহত হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। জনস্বার্থে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে দ্রুত সংযোগ সড়কটি নির্মাণের জন্য জোর দাবী জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
চরমুকুন্দি এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত ৩-৪ বছর আগে ব্রিজ নির্মাণ করে চলে গেছে ঠিকাদার। তারপর থেকে আমরা একদিনের জন্যও এই ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে পারিনি। ব্রিজ করে দিছে ঠিক, কিন্তু ব্রিজে ওঠার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি তারা (ঠিকাদার)। এখন এই ব্রিজ দিয়ে চলাচলের আশা ছেড়ে দিয়েছি আমরা।
এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারি কামাল হোসেন বলেন, আমার লাইসেন্সে কাজ হলেও বাস্তবে কাজ করছে সোনালী এন্টারপ্রাইজের মালিক গোলাম মোস্তফা। কিভাবে সংযোগ সড়কের কাজ রেখেই জামানতের টাকা উঠিয়ে নিয়েছে তা তিনি আর পিআইও জানে। সোনালী এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারি গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি মাটি ভরাট করে দিয়েছি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রবিউল ইসলাম খান বলেন, ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজটি পৌরসভার করে দেয়ার কথা ছিল। তারা বালু দিয়েছেন, কিন্তু বর্ষার পানিতে তা সরে গেছে।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। ব্রিজটির জন্য একটি প্রকল্প দিয়ে দিচ্ছি। যেন ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ হয়ে যায়।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments