পটুয়াখালীর দুমকীতে পাওনা টাকার দাবিতে মো. আবদুল হাকিম খান নামে এক মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাধার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সকালে স্থানীয় পীরতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন ও দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন মাহমুদের মধ্যস্থতায় লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জলিশা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হাকিম খান শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। শনিবার সকাল দশটায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের উদ্দেশ্যে নেয়ার সময় পীরতলা বাজার এলাকায় জলিশা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা লাশ আটকে দেয়।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শাহীন মাহমুদ ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল আলম মৃধার হস্তক্ষেপে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ হাকিম জলিশা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে ৬৭ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেন। স্থানীয় কয়েকজনের নিকট থেকে চাকুরি প্রলোভনে ৩৫ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে লিখে নেন।
বিদ্যালয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক সৈয়দ আতিকুল জানান, চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে আমার বাবার কাছ থেকে ২০ শতক জমি লিখে নেন। এমপিওভুক্ত করার আশ্বাস দেখিয়ে দ্রুত ভবন নির্মাণ করতে আমাদের নির্দেশ দিলে আমরা ভবন নির্মাণ করি। তিনি আমাকে একটি স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা চেক দেন কিন্তু হিসাবে কোন টাকা জমা ছিল না। একদিকে জমি দিয়েছি অন্যদিকে ভবন নির্মাণ করে অনেক টাকা ব্যয় করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন প্রধান শিক্ষক মোঃ মশিউর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের জন্য ১০ শতক জমি দিয়েছেন। প্যাটার্ন অনুযায়ী ৬৭ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের বিধান আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন তিনি ভালো বলতে পারবেন না প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিই সব জানতেন। তবে কতজন শিক্ষক কর্মচারীর কাছ থেকে প্রতিষ্ঠাতা কী পরিমাণ টাকা নিয়েছেন তা তাঁর জানা নেই।
দুমকী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.সাইফুল আলম মৃধা জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারী ও মরহুমের পরিবারবর্গের সাথে বিকেলে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আলোচনা হবে সেখানে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শাহীন মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে তাঁর কার্যালয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারী ও মরহুমের পরিবারবর্গ নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments