তোর বোনকে মেরে দিয়েছি, লাশ পড়ে আছে এসে নিয়ে যা
নিজ স্ত্রীকে হত্যা করে শালিকে ফোন করে স্বামী বলছে, তোর বোনকে হত্যা করে দিয়েছি, লাশ পড়ে আছে এসে নিয়ে যা। এমন চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে। ঘটনাটি ঘটেছে সৈয়দপুর শহরের নয়াবাজার এলাকায়। পরে পুলিশ এসে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ঘরের তালা ভেঙে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম শবনম পারভিন (২৮)। তিনি উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর পীরপাড়ার মৃত. আব্দুর রহমানের মেয়ে। তার ১ বছর বয়সী একটা মেয়েও রয়েছে।
নিহত শবনমের বোন রক্সি পারভিন জানান, দেড় মাস আগেই শহরের ফুচকা বিক্রেতা জাহাঙ্গীরের (হত্যাকারী) সাথে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পরই কিছুটা মনোমালিন্য চলছিল তাঁদের। বোনকে নিয়ে সে কোথায় ভাড়ায় থাকে সেটাও আমরা জানতাম না। এরই মাঝে আজকে ফোনে দুলা ভাইয়ের সাথে কথা বললে তিনি দম্ভ করে বলেন ‘তোর বোনকে মেরে ফেলে দিয়েছি, আসে লাশ নিয়ে যা”। কথা শুনে রীতিমতো চমকে উঠি। পরে কোথায় ভাড়া থাকে তা খবর লাগিয়ে নয়াবাজার এলাকায় আসি। সেখানে জানলাম যে কালকেই তাঁরা এখানে একটি বাড়িতে ভাড়ায় উঠেছে। বাড়িটি বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিল। জানালা থেকে দেখি বোনের নিথর দেহ খাটে পড়ে আছে।
জানা যায়, নিহত গৃহবধূর স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন সৈয়দপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার (দর্জিপাড়া) মমতাজ হোসেনের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। প্রথম স্ত্রী সন্তান থাকাবস্থায় এক মাস আগে নিহত শবনমকে বিয়ে করেন। এতদিন শবনম তার মায়ের বাড়িতেই ছিল।
গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শহরের নয়াবাজার এলাকায় একটা রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে শবনমকে নিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু বিষয়টা শবনমের মা জানতেন না।
ঘটনার পর সন্ধ্যায় মেয়ের মা ও বোনরা এসে ঘরের জানালা দিয়ে দেখে মেয়েটি খাটের ওপর লেপ কাঁথা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় পড়ে আছে। পরে আশেপাশের লোকজন এসে মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশে খবর দিলে সৈয়দপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এ কে এম ওয়াহিদুন্নবী ও সৈয়দপুর থানার ওসি ফইম উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রশাসন এসে তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে শবনমের স্বামী জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছে।
শবনমের মা ফারজানা বলেন, আমার মেয়ের ১১ বছরের এক অবুঝ মেয়ে রয়েছে। মেয়েটিকে নিয়ে কীভাবে বাঁচবো। আমার মেয়ের হত্যাকারীদের আমি বিচার চাই।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়ির তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহাল করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করতে হবে। স্বামী পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে ইতিমধ্যে প্রশাসন কাজ করছে।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments