Image description

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ২০১৩ সালে দেশের ১৮তম স্থলবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে সোনাহাট স্থলবন্দর। শুরু থেকেই স্থলবন্দরটি রাজস্ব আয়ের বিপুল সম্ভাবনাময় একটি বন্দর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও শুধু ইমিগ্রেশন চালু না থাকায় আমদানি-রপ্তানি ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে নাম। প্রায় ১ যুগ অতিবাহিত হলেও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আয়।


সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইমিগ্রেশন চালুর বিষয়ে বার বার আশ্বাস দিলেও আজও চালু হয়নি ইমিগ্রেশন। তাই শীঘ্রই এই বন্দরে ইমিগ্রেশন চালুর দাবি জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ব‍্যাবসায়ীরা।

জানা গেছে,ভারতের আসাম, মেঘালয়সহ সেভেন সিস্টার খ্যাত রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের পণ্য আমদানি ও রফতানির জন্য ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সোনাহাট স্থলবন্দর চালু করা হয়। ওই সময়ে সোনাহাট স্থলবন্দরটি চালু হলেও ২০১৬ সালে ১৪ দশমিক ৬৮ একর জমির ওপর বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করা হয়। বর্তমানে এই বন্দরে ৬০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ওয়্যারহাউজ, ৯৬ হাজার বর্গফুটের পার্কিং ইয়ার্ড, ৯৫ হাজার বর্গফুটের ওপেন স্টকইয়ার্ড, শ্রমিকদের জন্য দুটি বিশ্রামাগার, একটি প্রশাসনিক ভবন ও দ্বিতল ডরমিটরি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

দেশের ১৮তম এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১০টি পণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে সব পণ্য রফতানি করতে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশে ১০টি পণ্য আমদানির জন্য অনুমতি রয়েছে এবং নিষিদ্ধ পণ্য ব্যতিরেকে বাংলাদেশি সকল পণ্য রপ্তানির অনুমতি রয়েছে। আমদানি পণ্যগুলো হচ্ছে পাথর,কয়লা, তাজা ফল, ভূট্টা, গম, চাল, ডাল, আদা,পেঁয়াজ এবং রসুন। তবে বন্দর চালুর দীর্ঘ সময় পার হলেও এ পর্যন্ত শুধু কয়লা ও পাথর আমদানি করা হচ্ছে। 

অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে জুট ওয়েস্ট কোটন,সিনথেটিক নেট,গার্মেন্টস পণ্য,আকিজের ফ্লাই উড,ও প্লাস্টিকের পণ্য। এতেই বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকা আয় হচ্ছে।

বন্দর ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ইমিগ্রেশন চালু না থাকায় ভারতের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি যোগাযোগের ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া মাঝেমধ্যেই আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে প্রায় ৩ হাজার
শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বন্দরের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও মিজানুর রহমান বলেন,‘এই বন্দরটি চালু করার পর অনেক আশা নিয়ে আমরা ব্যবসা শুরু করি। এরপর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসা শুরু করে। কিন্তু ভারতীয় প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে এলসি করেও কয়লা ও পাথরের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। এতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অপরদিকে ইমিগ্রেশন
না থাকায় ৪৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করতে হয়। ফলে অনেক সময়েই জরুরি ব্যবসায়িক আলাপ সম্ভব হয় না।এছাড়াও এই বন্দর দিয়ে দশটি পণ্য আমনানীর অনুমতি থাকলেও পাথর ও কয়লা ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দামে বনিবনা না হওয়া এবং পরিবহণ খরচ বেশী হওয়ায় সেসব পণ্য আমরা আনতে পারছি না।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, সোনাহাট স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। দুই দেশের মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত হলেই ইমিগ্রেশন চালু করা হবে। ইমিগ্রেশনের যাবতীয় অবকাঠামো আমাদের প্রস্তুতির মধ্যেই আছে।

মানবকণ্ঠ/এসআর