Image description

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা এখন যেন সোনালী রঙের এক বিশাল ক্যানভাসে পরিণত হয়েছে। সরিষার ফুলের সোনালী আভা সারা এলাকাকে মুখরিত করে তুলেছে। মাইলের পর মাইল জুড়ে সরিষার ফুলের সমারোহ! মৌমাছিরা যেন এই সোনালী সমুদ্রে ডুবে গেছে। তাদের গুঞ্জন আর ফুলের মিষ্টি সুবাস মিলে মিশে যেন এই মাঠকে করে তুলেছে এক অপরূপ স্বর্গে।

সলঙ্গার এই সোনালী মাঠে শুধু মৌমাছিরাই নয়, বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মধু সংগ্রহকারীরাও ব্যস্ত। তারা মৌচাক সাজিয়ে রেখেছে সরিষার ফুলের পাশে। মধু সংগ্রহের কাজ চলছে জোরকদমে। মধু সংগ্রহকারীরা এই সুযোগে প্রকৃতির কোলে এক অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এবছরে উপজেলা জুড়ে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। সরিষা ক্ষেতের চোখ জুড়ানো হলুদ ফুল আকৃষ্ট করছে মৌ-মাছিদের। তাই এ অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি সরিষা ক্ষেতের পাশে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৌ-খামারীরা বসিয়েছেন মৌমাছির বাক্স।মধু চাষের বেশি কিছু পদ্ধতির মধ্যে ফুল আসার সময় সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করা একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি।

সলঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল বারীক বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স বসালে পরাগায়নের ফলে সরিষার উৎপাদন বাড়ে। আর ভালো ফলন হলে ৮ থেকে ৯ মণ সরিষা পাবেন বলে আশা তার।

উত্তরবঙ্গ মৌ চাষি সমিতি সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা মৌ ফার্মের পরিচালক শিশির কুমার সাহা বলেন, উপজেলার বাগমাড়া এলাকায় সরিষার মাঠে মৌমাছির বাক্স বসিয়েছেন তিনি। প্রতি বছরের মতো এবারও তিনি ১০০টি উপরে বাক্স স্থাপন করেছেন। এসব বাক্স থেকে এক সপ্তাহ পর পর মধু আহরণ করা হবে। এসময়ে একেকজন মৌচাষি গড়ে দুই থেকে আড়াই টন মধু আহরণ করতে পারে। এবার সরিষার গাছে ফুল বেশি আসায় মধু আহরণ ভালো হবে বলে আশা করছি। মধু সংগ্রহের সময় সহজ শর্তে ঋণ এবং সরকারিভাবে মধু বিক্রির ব্যবস্থা থাকলে আমরা আরও লাভবান হতে পারবো।শুধু তাই নয় সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে উৎপাদিত মধু বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান, সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে মৌ-খামারীরা আসছেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে।তারা নিজেদের পছন্দসই জায়গায় খামারের বাক্স বসাচ্ছেন।গত বছর এ উপজেলায় ১২৫ টি মৌ-খামার বসেছিলো। এবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ২ হাজার মৌ-বাক্স বসেছে। এ বছর মধু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ২৫৫ কেজি।

মানবকণ্ঠ/এসআর