ফেনীর পরশুরামে মুহুরী নদীতে সেচ পাম্প বসাতে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। স্থানীয় কৃষকরা গত একসপ্তাহ ধরে চেষ্টা করেও বিএসএফের বাধার কারণে মুহুরি নদীতে জমি চাষাবাদের জন্য পানির পাম্প চালু করতে পারছে না। তবে পরশুরাম উপজেলার নিজকালিকাপুর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. শাহজাহান জানিয়েছেন শীঘ্রই কৃষকদের নিয়ে পানি তোলা হবে।
এতে পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব নিজকালিকাপুর সীমান্ত এলাকায় প্রায় ২০০ কৃষকের আগামী বোরো চাষাবাদে ১৪০ একর জমির চাষাবাদ বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, পূর্ব ও পশ্চিম নিজকালিকাপুর এলাকার ১০ থেকে ১২ জন কৃষকের পরিচালনা ও স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘আদর্শ জনকল্যাণ সমিতি’র অধীনে প্রায় ১৪০ একর জমিতে গত ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে মুহুরি নদীর পানি সেচ দিয়ে চাষাবাদ করে আসছে। তবে চলতি মৌসুমে চাষাবাদের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে মুহুরি নদীতে সেচ পাম্প বসানোর চেষ্টা করলে বিএসএফ বাধা দেয়। স্থানীয় কৃষকরা বিষয়টি নিজ কালিকাপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যদের অবহিত করে।
বিজিবি-৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভারতীয় বিএসএফের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি কৃষকদের আশ্বস্ত করে জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা শেষে সেচ স্কিম চালু করা হবে।
আদর্শ জনকল্যাণ সমিতির ম্যানেজার আব্দুল মালেক বলেন, পূর্ব নিজকালিকাপুর এলাকার বাসিন্দারা গত ৩০ বছর ধরে মুহুরি নদীতে পাম্প বসিয়ে নদীর পানি সেচ দিয়ে জমি চাষাবাদ করে আসছেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে নদীতে সেচ পাম্প বসাতে গেলে বিএসএফ বাধা দেয়।
স্থানীয় কৃষক আবুল খায়ের বলেন, বিএসএফে’র বাধার কারণে জমি চাষাবাদের জন্য সেচ পাম্প বসাতে পারছে না কৃষকরা। এতে কৃষকদের চাষাবাদের জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সেচ স্কিম পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা নুর মোহাম্মদ জানান, গত ৮ থেকে ১০ বছর আগেও একবার বিএসএফ ওই স্থানে সেচপাম্প বসাতে বাধা দেয়। পরে বিএসএফ ও বিজিবির দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে সেটি পুনরায় চলমান ছিল। তবে গত ৪ দিন আগে আমরা সেচপাম্পটি বসাতে গেলে বিএসএফ বাধা দেয়। আমরা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে জানালে বিজিবি ও বিএসএফের দুই পক্ষের আলোচনা হয়। পরে আমাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। আশা করছি বিষয়টি সমাধানের মাধ্যমে আমরা সেচ কাজ করতে পারবো।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments