মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার রাথুরা গ্রামে চারদিন আগে এক নারীকে জবাই করে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী লায়লা আরজু দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় তাঁকে জবাই করে হত্যা করে আসামি সেকেন্দার আলী।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন। মানিকগঞ্জ আদালতে ১৬৪ ধারামতে দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন আসামি সেকেন্দার আলী।
পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুনের প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ঘিওর উপজেলার রাথুরা গ্রামের সেকেন্দার আলী (৬৬) ও লায়লা আরজু (৬২) দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে। তারা বিবাহিত এবং বাড়িতে সেকেন্দার আলী ও তাঁর স্ত্রী লায়লা আরজু থাকেন। গত ১৫ জানুয়ারি সকালে ওই দ্বিতল বাড়ি থেকে লায়লা আরজুর জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ১৬ জানুয়ারি লায়লার ভাই ময়নুল ইসলাম মুকুল বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত করেন।
তদন্তে দেখা যায়, ঘটনার সঙ্গে লায়লা আরজুর স্বামী সেকেন্দার আলী সরাসরি যুক্ত। তাঁকে শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেকেন্দার আলী স্ত্রীকে হত্যার কারণ পুলিশকে বলেন।
সেকেন্দার আলী পুলিশকে বলেন, তাঁর স্ত্রী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড ও স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত এবং জরায়ু অপসারণ হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে তিনি অসুস্থ। এ কারণে তাঁরা আলাদা আলাদা রুমে থাকতেন। স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না থাকায় তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করবেন বলে জানান। দ্বিতীয় বিয়েতে তাঁর স্ত্রী বাধা দেন।
তিনি আরও জানান, এ নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি রাতে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয় নিয়ে ১৫ জানুয়ারি সকাল পৌনে ৬টার দিকে আবারও ঝগড়া হয়। ঝগড়ার সময় তাঁর স্ত্রী লায়লা থাক্কা লেগে নিচে পড়ে গেলে তিনি রান্নাঘর থেকে ফল কাটার ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলায় ৩টি খোঁচা দেন। স্ত্রীর গলা দিয়ে রক্ত বের হলে তিনি একটি ওড়না দিয়ে গলা পেচিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের দিকে চলে যান। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়িতে এসে আত্মচিৎকার করে বলেন, তাঁর স্ত্রীকে কে বা কারা জবাই করে হত্যা করেছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামলা হওয়ার পর মাত্র দুদিনের মধ্যে আলোচিত এই হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় দায়স্বীকারোক্তি করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
Comments