রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে আহত ৫

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বাউসা বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
আহতদের মধ্যে জামায়াতের চার ও বিএনপির একজন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাউসা ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়মের প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানববন্ধনের আয়োজন করেন জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা বিভিন্ন ফ্যাস্টুন ও ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
অন্যদিকে একই সময়ে বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে তারা মানববন্ধন ও জামায়াতবিরোধী শ্লোগান দেন। এ সময় তারা জামায়াতের এ মানববন্ধনকে ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মজিবর রহমানের অভিযোগ, ৫ অগাস্টের পর ইউনিয়নে টিসিবি ও ভিজিডি কার্ডসহ সুবিধাভুগিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় ও তথ্য সেবা কেন্দ্রে সুবিধার নামে চাঁদাবাজি করা হয়েছে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে শান্তি পূর্ণ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে তাদের লোকজন বিক্ষোভ মিছিল বের করে উস্কানিমূলক স্লোগান দেন।
তিনি বলেন, “আমরা গোলযোগ এড়াতে মানববন্ধন কর্মসূচি সংক্ষেপ করে চলে যাচ্ছিলাম। এ সময় তারা পেছন থেকে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট ও ফ্যাস্টুন-ব্যানার কেড়ে নেয়।”
হামলায় আব্দুর রহমান (২২), সৌরভ আলী (২০), আবু তাহের (৩৩) ও হোসেন আলী (৩৪) নামে চার জামায়াত কর্মী আহত হন বলে দাবি মজিবর রহমানের।
এদিকে, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, “সরকারি সুবিধার বিষয়াদি নিয়ে জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কাজ করা হয়েছে। এরপরও তারা আমাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। তাদের মানববন্ধন করতে নিষেধ করলেও শোনেনি। এ নিয়ে জনগণ মানববন্ধনের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিবাদ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটে।”
“এ সময় তারা আমাদের এক কর্মীর মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং একজনকে মারপিট করে। তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”
বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন, “সবেমাত্র দায়িত্ব পেয়েছি। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। আমি চাইলেই একা সবকিছু ভাগ-বন্টন করতে পারব না। সবাইকে নিয়েই বন্টন করতে হয়। আমি সেটাই করেছি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।”
বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, “মারামারির খবর পেয়ে বাউসা বাজারে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগে সবাই সেখান থেকে চলে গেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ওই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Comments