কুড়িগ্রাম থেকে তুলে লালমনিরহাটে নিয়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার এক কিশোরীকে (১৭) তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ফজলুল হক (৪৮) নামে এক গাড়িচালক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। লালমনিরহাটের সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় কিশোরী পালিয়ে রাজারহাট উপজেলার গতিয়াশাম গ্রামে বাছের নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই বাড়িতে গিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নেয়। তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী চর গোকুন্ডা গ্রামে ফজলুর বাড়িতে গেলেও তাকে পায়নি। স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় ফজলু।
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়ি রাজারহাট উপজেলায়। কিশোরী জানায়, ফজলুল হক পারিবারিকভাবে তার পরিচিত। প্রথম রোজার দিন কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর বাড়িতে আটকে রেখে স্ত্রীর উপস্থিতিতে ফজলু তাকে ধর্ষণ করে। পরে সেলিম নামে এক ব্যক্তিসহ তার একাধিক সহযোগীকে দিয়ে ধর্ষণ করায়। বুধবার সন্ধ্যায় সুযোগ বুঝে পালায় কিশোরী।
কিশোরী বলেন, ‘বিয়ের কথা বলে প্রথম রোজার দিন আমাকে তুলে নিয়ে যায় ফজলু। তার আগের কয়েকজন স্ত্রী আছে। জানতে পেরে আমি চলে আসতে চাই। কিন্তু আটকে রেখে তার স্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রতিদিন ধর্ষণ করে। ভ্যানচালক সেলিমসহ তার একাধিক সহযোগীকে দিয়ে ধর্ষণ করায়। গতকাল সুযোগ বুঝে আমি পালিয়ে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নিই।’
‘অজু করে এশার নামাজের জন্য রেডি হইছি। এমন সময় হঠাৎ মেয়েটা আসি পায়ে পড়ি বললো, মা আমাক বাঁচান। আমাক কয়েকটা লোক তাড়া করছে। বলি কান্না শুরু করে। তখন তাড়াতাড়ি ঘরের দরজা বন্ধ করি দিয়া বাড়ির বাতি নিভি দিলাম। বাড়ি অন্ধকার করলাম যাতে কেউ না দেখে’ এভাবে ঘটনার বর্ণনা দেন কিশোরীকে আশ্রয় দেওয়া প্রতিবেশী গৃহবধূ রোসনা বেগম।
গৃহবধূর স্বামী বাছের বলেন, ‘আমি সব শুনে মেম্বারসহ স্থানীয়দের খবর দিই। তারা এসে সব শুনে পুলিশ প্রশাসনকে জানায়।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান জিহাদী বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা যাই। এলাকার লোকজন ফজলুর বাড়ি ঘেরাও করে। কিন্তু ফজলু পালিয়ে যায়।’
এলাকাবাসীর বরাতে হাসান জিহাদী বলেন, ‘ফজলুর একাধিক স্ত্রী। ফজলু ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌন ব্যবসা চালানোর অভিযোগ আছে। কিশোরীকে আটকে রেখে ফজলু ধর্ষণ করেছে এবং টাকার বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে ধর্ষণ করিয়েছে বলে ওই কিশোরী জানিয়েছে।’
রাজারহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব বলেন, ‘ফজলু বিয়ের কথা বলে কিশোরীকে নিয়ে যায়। এরপর ফজলুসহ একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছে কিশোরী। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। প্রকৃত ঘটনা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। ঘটনাস্থল লালমনিরহাট হওয়ায় মামলার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
Comments