Image description

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলা থেকে বন্য হাতি অপসারণের দাবিতে ৫ দিন পর আবারও কেইপিজেডের বিভিন্ন ফটক ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ভোর ছয়টা থেকে কর্ণফুলী উপজেলার কেইপিজেড দৌলতপুর স্কুল এলাকায় পিএবি সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল ৬টার সময় কেইপিজেডের বিভিন্ন ফটকে অবরোধ শুরু হয়। এ সময় শ্রমিকেরা আটকে পড়েন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন পিএবি সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। ওই সড়ক দিয়ে আনোয়ারা, কর্ণফুলী, চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার লোকজন চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া আজ কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হওয়া লোকজন ভোগান্তির শিকার হন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, খাবারের সংকট ও হাতির বিচরণস্থল ধ্বংস করে শিল্প কারখানা গড়ে তোলায় লোকালয়ে চলে আসছে হাতি। যার ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে এই এলাকার লোকজনের। এর আগে গত শুক্রবার কর্ণফুলী উপজেলায় হাতির আক্রমণে ৩ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হলে ওইদিন ভোরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। সেসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে চারদিনের মধ্যে বন বিভাগের মাধ্যমে এসব বন্যহাতি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও চারদিন পরও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না দেখায় আজ আবারো সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছে কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দারা।

চট্টগ্রাম শহরমুখী সাইফুল ইসলাম নামে এক চাকরিজীবী বলেন, আজ পবিত্র শবে কদর। সকলের ব্যস্ততা বেশি। আন্দোলনটা ঈদের পরও করা যেতো, এখানে কোনো বনবিভাগ বা কেইপিজেডের কেউ কষ্ট পাচ্ছে না। কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

তিনি বলেন, দুইদিন পরই ঈদ, বেতন পেয়েছি ব্যাংকে যাচ্ছি টাকা তুলতে। টাকা তুলতে না পারলে ঈদও করতে পারব না পরিবার নিয়ে। সকাল থেকে অবরোধে আটকে পড়ে পায়ে হেঁটে শহরের দিকে যাচ্ছি।

এদিকে সকাল এগারোটার দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। তাঁরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছেন।

কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বুঝতেছি না কেন কেইপিজেডকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। আমরাও চাই হাতি সরিয়ে নেওয়া হোক। হাতির আক্রমণে কেইপিজেডের বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিনিয়ত ক্ষতি হচ্ছে।’

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘গত বুধবার রাতে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া নেতৃস্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়েও আন্দোলন থেকে সরানো যায়নি। আন্দোলনকে আওয়ামী লীগের কিছু মেম্বার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতারা পরিস্থিতি খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এ জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’