কেন্দ্রে গুলি চালিয়ে ভোটাধিকার হরণ, সাত বছর পর মামলা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে ভোটকেন্দ্রে গুলি চালিয়ে একজনকে আহত ও ভোটাধিকার হরণ করার অভিযোগে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এ ঘটনার দীর্ঘ সাত বছর পর থানায় মামলা করা হয়। এ মামলায় উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মিজানুর রহমান খোকন ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শাহিনসহ ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ জনকে। রবিবার (৬ এপ্রিল) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন ওই ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সদস্যরা এক হন। এ আসনের ১৪ দলীয় মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে বিজয়ী করতে তারা অবৈধভাবে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এরপর ভোটারদের ভয় দেখিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেন। এ সময় জাতীয় পার্টির ইউনিয়ন সভাপতি শরিফুল ইসলাম শাহিনের নির্দেশে তারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে মামলার বাদী আইয়ুব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (৩২) নামের এক ভোটারকে গুলি করেন। গুলি শাহিন মিয়ার বাম উরু ভেদ করে ডান উরু দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে শাহিন মিয়া গুরুতর আহত হন এবং রক্তক্ষরণের কারণে তাকে দ্রুত প্রথমে সুন্দরগঞ্জ হাসপাতাল এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হলেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। শাহিন মিয়া বর্তমানে স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন মামলা করতে বিলম্ব হয়েছিল।
মামলার বাদী আইয়ুব আলী বলেন, সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে আমার ছেলেকে পঙ্গু করেছে। এতদিন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীদের চাপে মামলা করতে পারিনি। অবশেষে সাত বছর পর মামলা করেছি। আমি ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব এবং আশা করি, আইন সঠিক পথে ব্যবস্থা নেবে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ভোটকেন্দ্রে গুলি চালানোর ঘটনায় দীর্ঘ সময় পর মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর আছে এবং আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের পরান বয়েজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাত বছর পর গত ৩ এপ্রিল রাতে মামলাটি করেন শান্তিরাম ইউনিয়নের উত্তর পরান গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে মো. আইয়ুব আলী।
Comments