Image description

গাজার আকাশে লাশের গন্ধ, বাতাসে কান্নার রোল। অবুঝ শিশুদের রক্তে ভেজা মাটি, মায়ের কোলে নিথর দেহ। ইসরাইলি বাহিনীর এই বীভৎসতার বিরুদ্ধে নীলফামারীর সৈয়দপুরের রাজপথে নেমে এসেছে একঝাঁক শিশু, হাতে প্রতীকী কফিন। তাদের ছোট্ট চোখে আগুনের ফুলকি, কণ্ঠে প্রতিবাদের বজ্রনিনাদ।

"তুমি কে? আমি কে? ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন!" স্লোগানে কেঁপে উঠছে আকাশ-বাতাস। তারা জানে না জিহাদ কী, বোঝে না যুদ্ধের ভয়াবহতা। শুধু জানে, তাদের ভাই-বোনেরা মরছে, তাদের বাড়িঘর পুড়ছে। তাই তারা নেমে এসেছে রাস্তায়, বুক ভরা ঘৃণা আর চোখে জল নিয়ে।

তাদের ছোট্ট হাতের কফিনগুলো যেন ইসরায়েলের নৃশংসতার প্রতীক। তারা চায়, বিশ্ব দেখুক, বুঝুক, এই শিশুদের আর্তনাদ। তারা চায়, মুসলিম বিশ্ব এক হোক, রুখে দাঁড়াক এই বর্বরতার বিরুদ্ধে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে সৈয়দপুর শহরের কয়া গোলাহাট বাজারে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের মাদ্রাসা ফায়জে রাসুল (সা:) এর শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীসহ অত্র এলাকার বিভিন্ন শিশু, বিভিন্ন বয়সী মানুষ ও মসজিদ বায়তুল মেরাজের মুসল্লীরা বিভিন্ন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে ওই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেন। 

এতে নেতৃত্ব দেন কয়া গোলাহাট বায়তুল মেরাজ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শাহজাদা হোসেন আশরাফী সাহেব।

কর্মসূচিতে মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী আজমিরা বলে, "তারা আমার মত ছোট শিশুদের হত্যা করছে। শিশুরা তো নিষ্পাপ, তাদের মারছে কেন?" বাবার মোবাইলে শিশু হত্যার দৃশ্য দেখে আজমিরার মত শত শত শিশু প্রতীকী কফিন ও প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদে অংশ নেয়।

একই শ্রেণীর আরেক শিশু আব্দুর রহিম বলে, "আপুর মোবাইলে দেখেছি ইহুদিরা হাজার হাজার শিশুকে মারছে প্রতিদিন। এর বিরুদ্ধে আমরা এসেছি। আল্লাহ আমাদের শিশুদের কথা অবশ্যই শুনবেন।"

ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই প্রতিবাদ সভায় মাওলানা শাহজাদা হোসেন আশরাফী, মাওলানা মুস্তাক রেজা, মাওলানা হাবিবুল্লাহ আত্তারীসহ অন্যান্য বক্তারা ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদ করেন। 

বক্তারা বলেন, "জিহাদের বাসনা আমাদের সকলের মনে আছে, কিন্তু মন চাইলেও যেতে পারছি না। তবে দেশে বসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আমাদের জন্য সব চেয়ে বড় জিহাদ হবে তাদের সকল পণ্য বয়কট করা।" 

ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় চুপ থাকা আরব দেশগুলোর সমালোচনা করে বক্তারা আরও বলেন, "আরবরা যদি ফিলিস্তিনের জন্য পশ্চিমা দেশে তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে দুইদিনে ইসরায়েলীরা পথে আসবে। কিন্তু আরবরাই ফিলিস্তিনের সাথে গাদ্দারী করেছে।" তারা ৫৭টি মুসলিম দেশকে অবিলম্বে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পরে সালাতো সালাম ও মোনাজাতের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষ হয়।