Image description

শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের জিলাদপুর মৌজায় প্রবাহিত বিলাশ নদী থেকে একই ইউপির ৭নং ওয়ার্ড সদস্য হাবিবুর রহমান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মাটি ও বালু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় গ্রামবাসী গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

জানা গেছে, ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে জামসী গ্রামের রাসেল মিয়া, মুজিব মিয়ার একটি সিন্ডিকেট বিগত ২০১৭ সাল থেকে বিলাশ নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি ও পলি বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। অবৈধভাবে ও যত্রতত্র নদী খনন করায় লাংলিয়া ছড়ার স্লুইস গেইট থেকে বিভিন্ন স্থানে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এতে নদীর পশ্চিমাংশে কৃষি জমি, মাছের পুকুর ভাঙ্গনের মুখে পড়ে কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। বালু ও মাটি স্থানান্তরে যানবাহন চলাচলে সুবিধার্থে নদীর উপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। নীচু এই সেতুর কারণে বর্ষাকালে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত্র হয়ে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়।

স্থানীদের অভিযোগ, বালু মাটি পরিবহনে ভারী ট্রাক চলাচল করায় গ্রামের কাঁচা-পাকা রাস্তা-ঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে এলজিইডির পাকা রাস্তা, বিলাশ নদীর উপর নির্মিত সরকারি ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি পলি ও বালু মাটি উত্তোলনের কারণে আসছে বর্ষায় নদীর পশ্চিমে বিস্তুর্ণ এলাকায় আবারো ভয়াবহ ভাঙ্গনের আশঙ্কা রয়েছে। ভাঙ্গনজনিত কারণে ইতোমধ্যে জামসী ও জিলাদপুর গ্রামের প্রায় ২-৩ হাজার কৃষক ও মৎস্যচাষীরা জমি হারিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। 

রোববার জিলাদপুর গ্রামের বিলাস নদীর ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার আশেপাশের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে- তৎকালীন কৃষি মন্ত্রী ও আশিদ্রোন ইউপি চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান প্রভাব খাটিয়ে ২০১৭ সাল থেকে বিলাস নদী থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। দীর্ঘ সময় থেকে নদীর মাটি বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তবে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভাঙ্গন কবলিত কৃষি জমি, সরকারি রাস্তা, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামো। প্রভাবশালী হওয়ায় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ মানুষ ভয়ে কথা বলতে পারে না।
 
এবিষয়ে ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সবাই নিজের জান বাঁচানোর জন্য আমার নাম বলছে। এটি লাংলিয়া ছড়া লাইনের অংশ। সিন্দুরখান ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত রবিন ও ইউপি সদস্য মুরাদ ও মাখন মিয়া এই লাইনে ডাক পেয়েছে, তাদের দায়িত্বে এখান থেকে বালু তোলা হচ্ছে।’ 

সিন্দুরখাঁন ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘প্রশ্নই উঠে না-এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’