Image description

রাজশাহীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে বেনু বেগম (৭০) নামে অস্ত্রোপচারের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার(৯ এপ্রিল) সকালে মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। 
বেনু বেগমের বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার সুজানগর মিতালী ক্লাব এলাকায়। তিনি মৃত মতিনের কন্যা এবং মৃত বশির আহম্মেদের স্ত্রী।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পায়ের হাড় ভেঙে গেলে গত ৬ এপ্রিল বেনু বেগমকে রাজশাহীর মঞ্জু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার পায়ে অস্ত্রোপচার করেন ডা. হাবিবুল হাসান। কিন্তু অস্ত্রোপচার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাকে কোনো পর্যবেক্ষণে না রেখে সরাসরি ওয়ার্ডে রাখা হয়।  বুধবার সকাল ৮টার দিকে বেনু বেগমের প্রচণ্ড শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়। এ সময় তার জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স ছিল না, ছিল না অক্সিজেনের সিলিন্ডারও। একপর্যায়ে ছটফট করতে করতে রোগী বেনু বেগম মারা যান। 
নিহত রোগীর ছেলে মো. সনি অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে ডা. হাবিবুল হাসান নামের এক চিকিৎসক মায়ের অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচার পরবর্তী তাকে পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখা হয়নি, সরাসরি ওয়ার্ডে রাখা হয়। সকালে মায়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে অক্সিজেন দেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স কেউ ছিলেন না। কোনো চিকিৎসক-নার্স না পেয়ে আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার খুঁজেও পেলাম না। পরে অক্সিজেনের অভাবে মা মারা যান।’
এদিকে অবহেলায় বিনা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমারসহ অন্যান্য স্টাফরা পালিয়ে যান। পরে সেখানে ছুটে যান পুলিশ সদস্য ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা বেলাল আহমেদ। এ সময় হাসপাতালের মালিকপক্ষের সঙ্গে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন। 
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিএনপি নেতা বেলাল আহমেদ বলেন, ‘অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা গেছেন। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চেয়েছে, তাই পরিবার ক্ষমা করে দিয়েছে। মামলা করলে লাশ ময়নাতদন্ত করতে হবে। এসব ঝামেলায় আমরা যাব না। তাই আমরা লাশ নিয়ে চলে যাচ্ছি। এটাই সমঝোতা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এদিকে হাসপাতাল পরিচালক মিঠুন কুমারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 
রোগীর অপারেশন করা চিকিৎসক ডা. হাবিবুল হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।