
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে গত তিন মাসে চারজন নিহত হয়েছেন রাজশাহী বিএনপিতে। এ জন্য গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দলে অনুপ্রবেশকারী ও সুযোগ সন্ধানী নেতাদের দায়ী করছেন দলটির প্রবীণ নেতারা। তাঁরা জানান, ব্যক্তি স্বার্থে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চলতি বছর বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রাজশাহী নগরীতে মারা গেছেন এক রিকশাচালক। পবায় প্রতিপক্ষের গুলিতে নিজ বাড়িতে খুন হন যুবদল নেতার বাবা। আর তানোরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মারা গেছেন বিএনপির স্থানীয় ২ নেতা।
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। আর তিন বছর আগে ঘোষিত কমিটি দিয়েই চলছে মহানগর বিএনপি। কমিটিতে পদ পাওয়া আর না পাওয়াদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে। তারা কর্মসূচিও পালন করছেন আলাদাভাবে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজশাহী বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্তি আরও দৃশ্যমান। এর প্রভাব পড়েছে অঙ্গ সংগঠনগুলোতেও। নিজেদের মধ্যে প্রায়ই ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা।
পবা যুবদল নেতা সালাউদ্দিন মিন্টু বলেন, ‘অনেকেই ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেকে বিএনপির কর্মী বা বিএনপির নেতা হিসেবে দাবি করছেন। তবে অতীতের কঠিন সময়ে তাঁদের কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।’
তবে নেতারা বলছেন, সংঘাতসহ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করলেই শাস্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে নেতা–কর্মীদের।
এ নিয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা বলেন, ‘সম্প্রতি যেসব হত্যার ঘটনা ঘটেছে সেগুলো বিচ্ছিন্ন। এগুলোর সঙ্গে আমাদের দলের কোনো নেতা-কর্মীরা জড়িত না। এসব হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত সেটাও বলতে পারব না। স্বৈরাচারী সরকারের লোকজন আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য এসব কাজ করে থাকতে পারে।’
রাজশাহী বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত বলেন, ‘দীর্ঘদিন ভোট না হওয়ার কারণে রাজনীতিতে একটি জট তৈরি হয়েছে। এই জটের কারণে এই জটিল জিনিসগুলো কখনো কখনো মানুষের সামনে চলে আসছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দলের প্রবীণ নেতাদের দাবি, সুবিধাভোগী নেতাদের আশ্রয়ে থেকে সুযোগ সন্ধানীরা নিজেদের স্বার্থে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।
এসব নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘যারা আসল বিএনপি তাঁরা এসবের সঙ্গে জড়িত না। দলের যারা পোড় খাওয়া, ত্যাগী নেতা সবাই এসব ঘটনায় জড়িতদের ঘৃণা করছে।’
Comments