
বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচর। ২০১০ সালে চরটি দৃশ্যমান হলেও ২০১৭ সালে এসে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের কারণে আলোচনায় আসে দ্বীপটি। ওই বছরই জরিপের মাধ্যমে দ্বীপটি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রভাব খাটিয়ে এটিকে হাতিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছেন বলে তখন অভিযোগ তুলেছিল চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দারা।
তবে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে দ্বীপটি নিজের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে সন্দ্বীপের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের দাবি ও নানামুখী তৎপরতার মুখে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সীমানা জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে।
এতে সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পেশাজীবীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গঠিত কমিটির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি চট্টগ্রাম জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে ভাসানচর চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের অংশ বলে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা ভাসানচরকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার অন্তর্গত দেখিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়।
এদিকে ভাসানচর সন্দ্বীপের মানচিত্রে যুক্ত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে- বিষয়টি জানাজানি হলে হাতিয়ার লোকজনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গত ৭ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়। এতে তিনি ভাসানচরকে হাতিয়ার অংশ উল্লেখ করে লেখেন ‘ভাসানচর হাতিয়ার ছিল, হাতিয়ারই থাকবে। দরকার শুধু ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ।’
সবশেষ বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে হাতিয়া ছাত্র যুব পরিষদ নামে একটি সংগঠন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে হাতিয়ার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। এতে ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপেরসঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার ষড়যন্ত্রের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সন্দ্বীপের বাসিন্দা ফাউজুল কবিরকে দায়ী করা হয়। এসময় বক্তারা তার পদত্যাগের দাবি করেন।
Comments