
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের মুরাদপুর এলাকায় নবনির্মিত একটি রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মাত্র তিন দিনের মধ্যেই ভেঙে ও দেবে যেতে শুরু করেছে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক থেকে চাকলমা পর্যন্ত এই রাস্তাটির নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং তদারকির অভাবকেই দুষছেন স্থানীয়রা। এতে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
সরেজমিনে মুরাদপুর এলাকায় দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন অংশে গাড়ির চাকা ও পায়ের চাপে দেবে যাচ্ছে । পুকুর পাড়ের দিকে রাস্তার পাশের ইটের গাঁথুনি ধসে পড়েছে। অনেক জায়গায় সামান্য টান দিলেই পিচ উঠে আসছে। এছাড়াও, সঠিকভাবে লেভেলিং না করার কারণে পুরো রাস্তাটি উঁচু-নিচু হয়ে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণকালে যথাযথভাবে রোলার ব্যবহার না করায় রাস্তার বিভিন্ন স্থানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যানের চাকা দেবে গিয়ে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। এই দুর্নীতিতে শিবগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ থাকতে পারে।
মুরাদপুর গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "এত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ এর আগে আমি আর কখনও দেখিনি। যেকোনও স্থান থেকে হাত দিয়ে টান দিলেই পিচ উঠে যাচ্ছে। সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি করায় এ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক শাস্তি এবং পুনরায় ভালো রাস্তা নির্মানের দাবি জানাচ্ছি।"
একই গ্রামের ইমন হাসান জানান, রাস্তা ভালোভাবে রোলার না করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগেই একটি অটোভ্যানের চাকা দেবে গিয়ে এক্সেল ভেঙে খাদে পড়ে কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, "সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও ঠিকাদার দায়সারা কাজ করেছে। এলজিইডি অফিসের লোকজন যদি ঠিকমতো তদারকি করত, তাহলে এমন খারাপ রাস্তা তৈরি হতে না।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঠিকাদার রাকিবের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আপনাদের কিছু বলার থাকলে এলজিইডিকে বলেন। আমি এলজিইডি কর্মকর্তাকে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছি। এলজিইডি কয়েকবার পরিদর্শন করে কাজ বুঝে নেওয়ার পরেই আমাকে টাকা দিয়েছে।"
তবে, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Comments