অসময়ের বৃষ্টিতে ক্ষেতলালে ধানের ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় অসময়ের টানা বৃষ্টিতে রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাঠে পানি জমে অনেক জায়গায় ধান গাছ লুটিয়ে পড়েছে, শীষে চিটা ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এবং কোথাও কোথাও গাছ পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে উপজেলার কৃষকেরা গভীর হতাশায় নিমজ্জিত।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা যে ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেটিই এখন বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। নিচু জমির অধিকাংশ রোপা আমন খেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ধান নষ্ট হচ্ছে। অনেক মাঠে ধান গাছ একেবারে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে, যা কাটা ও শুকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ক্ষেতলাল উপজেলায় প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। মাঠেই বিনা-১৭, ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৯০, স্বর্ণা-৫ এবং নতুন জাত ব্রি ধান-১০৩ রোপণ করা হয়েছিল। নতুন জাতের ধানে তুলনামূলক ভালো ফলনের আশা করা হলেও হঠাৎ বৃষ্টি সেই আশায় বড় ধাক্কা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, "অসময়ের বৃষ্টিতে ক্ষেতলালের অনেক রোপা আমন ধানের খেত এখন পানিতে তলিয়ে আছে। নিচু এলাকার ধানগাছ শিকড়সহ পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা কৃষকদের দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ধানে বাদামী ঘাসফড়িং এর কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।"
স্থানীয় কৃষক আহসান হাবীব উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "গত সপ্তাহের বৃষ্টিতে আমার তিন বিঘা জমির ধান একেবারে লুটিয়ে পড়েছে। এখন কাটা সম্ভব হচ্ছে না, ধান কালো হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি আর এমন চললে পুরো ফসল শেষ হয়ে যাবে।"
এদিকে কৃষকেরা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে সার, বীজ ও শ্রমের উচ্চমূল্যের কারণে আগেই ব্যয় অনেক বেড়েছে। এখন বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হলে এই লোকসান সামাল দেওয়া তাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।
ক্ষেতলালের কৃষকেরা এখন এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে—একদিকে রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি, অন্যদিকে জমিতে জমে থাকা পানি শুকাতে সময় লাগছে। আবহাওয়া অনুকূলে না এলে উপজেলার সামগ্রিক ধান উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।




Comments