Image description

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জুগীরকান্দিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাতিলের পরও চলছে ‘নিহা’ নামের অবৈধ ইটভাটা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমি ও সরকারি খাল থেকে মাটি কেটে গড়ে তোলা এই ইটভাটা রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকায়।

পরিবেশবান্ধব ভাটার নামে কৃষিজমির মাটি ও সরকারি খালের আইল কেটে কার্যক্রম চালাচ্ছে নিহা ইটভাটা। ভাটায় প্রকাশ্যে কাঠ পুড়িয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এতে নির্গত ধোঁয়া ও কার্বনের আস্তরণে বিপন্ন হচ্ছে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের প্রায় ১২ হাজার একর কৃষিজমি ও ফসল উৎপাদন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জুগীরকান্দি এলাকায় এক কিলোমিটারের মধ্যেই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সড়কের দুপাশে ফসলের মাঠ ঘেরা ভাটায় কয়লার স্যাম্পল দেখানো হলেও ভেতরে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরির কার্যক্রম চলছে। পাশেই রাখা গাছের গুঁড়ি ও চেরাই কাঠের স্তূপ। দাতামা, জুগীরকান্দি, পূর্ব সাহাপুর ও রামপুর এলাকার কৃষিজমির মধ্যেই চলছে এই ভাটার কার্যক্রম।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, “নভেম্বরের শুরু থেকে মার্চ পর্যন্ত ইটভাটায় বনজ গাছ কেটে ও কৃষিজমির মাটি নিয়ে ইট তৈরি হয়। প্রশাসন সবই জানে, কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না।”

ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া ভাটা স্থাপন বা পরিচালনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ধারা ৮(ঘ)-এ বলা আছে, কৃষিজমি দখল বা ব্যবহার করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, “যেসব ইটভাটায় হালনাগাদ লাইসেন্স নেই, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে সিলগালা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

অভিযুক্ত ইটভাটা মালিক নাদিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মোদাব্বের হোসেন মুহাম্মদ রাজিব জানান, “নিহা ইটভাটার বিরুদ্ধে সরকারি খালের মাটি ও কৃষিজমির মাটি কাটার অভিযোগে নাদিমকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্রও বাতিল করা হয়েছে। তবে ভাটা গুঁড়িয়ে দিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা প্রয়োজন।”