Image description

মাদারীপুরে যৌতুকের দাবি ও পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধুকে রোধে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে জানিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে  মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘাটে। ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা।

জানা যায়, তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর গ্রামের প্রদীপ মন্ডলের মেয়ে দিপ্তী মন্ডলের বিয়ে হয় মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকার নিতাই মন্ডলের ছেলে তাপস মন্ডলের সাথে। বিয়ের সময় স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ দেয়া হলেও যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই দিপ্তীকে মারধর করা হতো বলে জানায় স্বজনরা। খুঁটিনাটি বিষয়টি নিয়েও সংসার চলতো ঝগড়া। এ নিয়ে দিপ্তী পরিবারের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোন সুরহা পায়নি। কয়েক বার বাবার বাড়ি চলে যায় নির্যাতিতা। পরে সান্তনা দিয়ে আবারো গৃহবধু দিপ্তীকে শশুর বাড়ি  নিয়ে আসা হয়। শেষশেষ যৌতুক ও পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার দুপুরে গৃহবধুকে স্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের। পরে এটিকে আহত্মহত্যা বলেও চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় বলে জানায় দিপ্তীর পরিবার। খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত দিপ্তীর কাকা গোকুল মন্ডল বলেন, ‘আমার ভাতিজিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। কোন অবস্থায় যেন অভিযুক্ত তাপস ও তার পরিবারের লোকজন ছাড় না পায়। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

দিপ্তীর বাবা প্রদীপ মন্ডল বলেন, ‘বিয়ের সময় ৫ ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়েছি। প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমার একটাই মেয়ে, কিন্তু এভাবে দিপ্তীকে মেরে ফেলবে বুঝতে পারিনি। এই ঘটনার সাথে যারা যারা জড়িত প্রত্যেকের ফাঁসি চাই।’

নিহতের আত্মীয় বিনোত মন্ডল বলেন, ‘ছয় মাস আগেও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ফার্ণিচার বানিয়ে দিয়েছি। দোকানদারের সেই ঋণ এখনো শোধ করা সম্ভব হয়নি। প্রায়ই মেয়েটিকে মারধর করতো তাপস। কিন্তু এভাবে শ্বাসরোধে করে হত্যা করবে জানলে মেয়েকে এই জায়গায় বিয়েই দিতাম না। এই ঘটনার বিচার না হলে অন্য অপরাধীরা আগামীতে আরো বড় অঘটন ঘটাতে সাহস পাবে।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন জানান, মৃত্যুর আগে স্বামী-স্ত্রী দুইজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবার থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

প্রসঙ্গত, নিহত দিপ্তীর এক বছরের মেয়ে রয়েছে। অভিযুক্ত তাপস মন্ডল মাদারীপুর আইনজীবি সমিতির আইনীজীবির মহুরি হিসেবে কর্মরত।