করাব ইউনিয়নে জন্ম নিবন্ধন ও ওয়ারিশ সনদে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ
হবিগঞ্জের লাখাইয়ের করাব ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে সেবার মান নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ডিজিটাল সরঞ্জামের অভাব, উদ্যোক্তা সংকট, সরকারি ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং সরকারি বিভিন্ন তালিকায় বৈষম্যের কারণে দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর কক্ষে থাকা কম্পিউটার, স্ক্যানার, প্রিন্টার ও ল্যাপটপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল সরঞ্জাম দীর্ঘদিন অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস দাবি করেন, এক বছর আগে সরঞ্জাম কেনা হলেও তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। এছাড়া, হিসাব সহকারীর রুমে ওয়াইফাই সংযোগ নেই, যা দাপ্তরিক কাজে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
ইউনিয়ন পরিষদে দুইজন উদ্যোক্তা কাজ করার কথা থাকলেও বর্তমানে শুধুমাত্র একজন পুরুষ উদ্যোক্তা কাজ করছেন। নারী উদ্যোক্তা অনুপস্থিত থাকায় অনেক সেবাগ্রহীতা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরে নারী উদ্যোক্তা কখনোই আমার পরিষদে আসেনি। আমি তার নামও জানি না।’
জন্ম নিবন্ধনের সরকারি ফি ৫০ টাকা হলেও উদ্যোক্তা ১২০ টাকা নিচ্ছেন। ওয়ারিশ সনদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ৩০০ টাকা করে আদায় করছে, যা অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় অনেক বেশি। তবে, এই ফি নেওয়া হলেও কোনো রশিদ দেওয়া হচ্ছে না, যা ভুক্তভোগীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধনের অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়টি লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। ওয়ারিশ সনদের জন্য আমরা ৩০০ টাকা নিচ্ছি, অন্য ইউনিয়নে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়।’ তবে রশিদ না দেওয়ার বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কিছু বলেননি।
টিসিবির মাস্টার রোলে দেখা গেছে, কোনো ওয়ার্ডে টিসিবি কার্ডধারীর সংখ্যা মাত্র ৬-৮ জন, আবার কিছু ওয়ার্ডে ২০-২৬ জনের বেশি। একইভাবে গর্ভবতী ভাতার ক্ষেত্রেও বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। এটি দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করছে।
স্থানীয়রা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন, যাতে করাব ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত করে সেবার মান নিশ্চিত করা যায়। এসব অভিযোগের বিষয়ে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।




Comments