Image description

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে অসুস্থ গবাদিপশুর জরুরি চিকিৎসার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি গাড়িটি কর্মকর্তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ‘মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক’ হিসেবে পরিচিত গাড়িটি ব্যবহার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা সুলতানা নিয়মিত অফিস যাতায়াত করেন। এমনকি তার কলেজশিক্ষক স্বামীকেও এই গাড়িতে করে কর্মস্থলে পৌঁছে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় দিঘলিয়া উপজেলায় খামার পরিদর্শন ও ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসার জন্য ডাবল কেবিন পিকআপটি (ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৩-৭৬৮৩) বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিধি অনুযায়ী, কর্মস্থলের বাইরে এই গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই এবং এটি রাখার জন্য অফিস চত্বরে গ্যারেজও নির্মাণ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ডা. মাহমুদা সুলতানা গত বছরের অক্টোবরে যোগদানের পর থেকেই খুলনার বয়রা এলাকার বাসা থেকে দিঘলিয়া অফিসে যাতায়াতে এই গাড়ি ব্যবহার করছেন। প্রতিদিন সকালে সরকারি গাড়িটি উপজেলা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে শহরে গিয়ে তাকে এবং তার স্বামীকে নিয়ে আসে। তার স্বামীকে দৌলতপুর বিএল কলেজে নামিয়ে দিয়ে তিনি অফিসে আসেন। আবার অফিস শেষে একইভাবে বাড়ি ফেরেন। এছাড়া তিনি নিয়মিত সকাল ৯টার পরিবর্তে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার দিকে অফিসে আসেন এবং সময়ের আগেই চলে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

গোয়ালপাড়া গ্রামের খামারি আলী আকবর বলেন, ‘এক বছরেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার দেখা পাইনি। প্রদর্শনীতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও বাস্তবে কোনো সহযোগিতা বা পরামর্শ পাওয়া যায় না।’

এডিএন প্রিমিয়াম সুইট ডেইরি ফার্মের ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের খামারে ২৮টি গরু রয়েছে, কিন্তু গত ৮-৯ মাসে সরকারি গাড়িতে করে কোনো ডাক্তার খামার পরিদর্শনে আসেননি।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দিঘলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা সুলতানা দম্ভোক্তি করে বলেন, ‘অফিসিয়াল পারফরম্যান্স ছাড়াও আমাকে অনেক কিছু সামলাতে হয়। সরকারি গাড়ি কোথায় গেল বা আমি কখন অফিসে এলাম এসব প্রশ্ন বিব্রতকর। অফিসের গাড়িতে স্বামীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিলে সাংবাদিকদের সমস্যা কী? ইউএনও বা এসিল্যান্ডের গাড়ি কোথায় যায়, তা নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তোলে না।’

এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘অফিসের জরুরি কাজ ছাড়া সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে বা কর্মস্থলের বাইরে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি সম্পূর্ণ বিধি-বহির্ভূত। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’