লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে অটোরিকশার ব্যাটারি চুরির অভিযোগ তুলে আবু কালাম (৪০) নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় কালামকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবু কালামের স্ত্রী রেহানার অভিযোগ, রোববার গভীর রাতে হায়দারগঞ্জের ভাড়াবাসা থেকে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন। এরপর সকালে স্বামীর খোঁজ করতে গিয়ে বামনি ইউপির কাঞ্চনপুরে তাকে একটি বাগানে আহত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথেই মারা যান তিনি।
তিনি আরও জানান, জিসান নামে এক ব্যক্তি দলবল নিয়ে তার স্বামী আবুল কালামকে একটি মাইক্রোবাসে জোর করে তুলে নিয়ে যান। এ সময় তারা পরিবারের লোকজনকে ভয়ভীতিও দেখান। অপহরণকারীরা তখন তার স্ত্রীকে জানায়, 'কয়েকদিন আগে আবুল কালাম সিএনজিচালিত অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করেছে'- এ কারণেই তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কর্তব্যরত চিকিৎসক পীযুষ চন্দ্র দাস বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দু'দিন আগে মাসুদ নামে এক ব্যক্তির অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি হয়। ওই অভিযোগে তাকে ধরে আনা হয়। রাতভর তাকে বাগানে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। সকালেও তাকে মারধর করা হয়েছে। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত জিসান নামের ছেলেটি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত বলেও জানান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জিসান রায়পুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছৈয়াল বাড়ির মঞ্জুল ছৈয়ালের ছেলে।
তবে স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা জানান, জিসান বিএনপির কেউ নন। দলীয় রাজনীতিতে সে সক্রিয় নয়। কর্মী হিসেবে বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে যোগ দিতো। সে ইদানীং চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। স্থানীয়ভাবে সে চোরা জিসান নামে পরিচিত। বিএনপি তার দায় নিবে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জিসানের একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভুঁঞা বলেন, ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়া হচ্ছে। বেলা ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে এমন সংবাদ পেয়ে আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনতে বলি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ গিয়ে জানতে পারে আহত ব্যক্তি মারা গেছে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments